ভাগ
তমাল সাহা
টুকুন বলে, ভাগ শব্দটাকে ভাগিয়ে দেওয়া যায় না বাবা!
আমি বলি, ভাগের আবার কী দোষ হলো?
টুকুন বলে, আমি এমনিতেই অঙ্কে কাঁচা, তার ওপর ভাগ! ভাগ মেলানো বড় কঠিন।
দাদুর সম্পত্তির ভাগ কী ঠিক হল? তুমি তো ঠকে গেলে।
আমি বলি, ওসব একটু আধটু হয়, মেনে নিতে হয়। শোরগোল করলে
পাড়া প্রতিবেশীরা শোনে। মর্যাদা হানি হয়।
মনে রেখো তোমার দাদু মাস্টারমশাই ছিলেন।
টুকুন বলে, ভাগ শব্দটা না থাকলে, দেশভাগ শব্দটি তৈরি হতো না। ধর্মভাগ শব্দটি তৈরি হতো না।
দেশ কি সত্যি ভাগ করা যায়?
কাঁটাতার দিয়ে তুমি যতই বেড়া তৈরি করো না কেন, তার উপর দিয়ে পাখি, মেঘ, বাতাস উড়ে যাবেই।
বেড়া দিলেও চাঁদ, সূর্যকে সবাই দেখতে পাবে, আর চাঁদ সূর্য সবাইকেই স্নিগ্ধ জ্যোৎস্না ও হিরন্ময় রোদ্দুর দেবে।
চাঁদ-সূর্যকে কেউ ভাগ করতে পারে বাবা? আর ধর্ম কি কোনো বস্তু যে তোমরা ভাগ করবে?
আমি মেয়ের কথা শুনতে থাকি। টুকুন বলে চলে—
পৃথিবী কমলালেবুর মতো গোল। পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘুরছে। তাকে থামিয়ে তুমি দু ভাগ করতে পারো?
পৃথিবীকে ভাগ করা যায় না বাবা।
আমি নিরুত্তর।
চুপ করে থাকি মাথাটি নীচু করে।