অবতক খবর : ভাটপাড়া শুরু হয়ে গেল বীজেমূল বনাম তৃণমূলের লড়াই। শান্ত ভাটপাড়া ফের অশান্ত হতে শুরু করেছে। ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগদান করেছেন। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় ভাটপাড়া থেকে একমাত্র অর্জুন সিং তৃণমূলে যোগদান করেছেন। কিন্তু যারা বিজেপি কর্মীরা ছিলেন তারা এখনও তৃণমূলে যোগদান করেননি কিন্তু তারাই এখন অর্জুনকে মাথায় তুলে নাচানাচি শুরু করেছেন। অর্জুন সিং-এর তৃণমূলে যোগদান করার পর তাকে প্রায় প্রতিটি বুথে বুথে ডেকেই সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে। আর সেই মঞ্চে দেখা যাচ্ছে প্রচুর বিজেপি নেতাদের। যারা তৃণমূলে যোগদান করেননি। এই দেখে সেখানকার সাধারণ মানুষ বলছেন, এই হচ্ছে বিজেমূল। যেখানে বিজেপি-তৃণমূল সবাই এক। আবার অপরপক্ষে একটি দল রয়েছে সেখানে শুধুই তৃণমূল। এই সমস্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তাদেরকে অর্থাৎ যারা শুধুই তৃণমূল তাদেরকে দেখা যাচ্ছে না। আর বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদেরকে ডেকে আনতে দেখা যাচ্ছে অর্জুন সিংকে। তিনি এটি শুধুই লাইমলাইটে থাকার জন্য করছেন, এমনই বলছেন ওই কর্মীরা।
তারা আরো বলছেন, আমাদের জন্য দল টাই আসল, কোন ব্যক্তি গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ জগদ্দল থানার অন্তর্ভুক্ত ভাটপাড়া পৌরসভা ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে গুপ্তার বাগান রেলওয়ে সাইডিংয়ে অর্জুন সিংকে সংবর্ধনা প্রদানের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু সভা শুরুর আগেই দেখা যায় সেখানে একটা গন্ডগোলের সৃষ্টি হয়। ভাঙচুর করা হয় চেয়ার। এর পরবর্তীতে হঠাৎ করেই দেখা যায় যে, সেখানে বিজেপি নেতা সঞ্জয় সিং তৃণমূলের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করতে শুরু করেন নাম না করে। তিনি বেশ কয়েক জন তৃণমূল কর্মীর কথা উল্লেখ করেন। অথচ তিনি নিজে এখনো তৃণমূলে যোগদান করেননি। কিন্তু তৃণমূলের হয়ে বক্তব্য রাখতে শুরু করেছেন। হয়তো তিনি ভুলে গেছেন যে তিনি এখনও বিজেপিতেই রয়েছেন,তৃণমূলের ঝান্ডা ধরেননি।
অন্যদিকে প্রকৃত তৃণমূল নেতারা সঞ্জয় সিং সম্পর্কে বলছেন, তিনি এখন নিজেকে তৃণমূলী ভাবতে শুরু করেছেন। অথচ তিনি নিজে এখনো পর্যন্ত বিজেপি নেতা। তিনি নিজেই ভাঙচুর করাচ্ছেন,অশান্তি সৃষ্টি করতে চাইছেন। পরবর্তীতে তিনি দোষারোপ করছেন তৃণমূল কর্মীদের ওপরে। তাঁর কি মনে আছে, তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে বিজেপিতে যোগদান করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়,পার্থ ভৌমিক, সোমনাথ শ্যামের বিরুদ্ধে যা নয় তাই বলতে শুরু করেছিলেন। তবুও তার লজ্জা নেই যে এখনো যোগদান না করেই দলে ঢুকে আমাদের নেতাদের নামে বদনাম করছেন। তিনি এখনো বিজেপি। এত বড় সাহস তিনি কোথা থেকে পান! তাহলে নিশ্চয়ই এর পেছনে কারোর হাত রয়েছে। অন্য কারোর মদতেই হয়তো এই গন্ডগোল সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়,অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তো এখনো সঞ্জয় সিং-কে যোগদান করাননি,তাহলে তিনি এত লাফালাফি করছেন কেন? কার মদতে এত বড় বড় কথা বলছেন? প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন ভাটপাড়ারই প্রকৃত তৃণমূল নেতারা। অদ্ভুত একটা পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। ভাটপাড়া এখন কে তৃণমূল কে বিজেপি তা কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। এখানে যোগদানের কোন ব্যাপার নেই। অর্জুন সিং তৃণমূলে চলে গেছেন তাই বিজেপির নেতারাও এখন তৃণমূল হয়ে গেছে। এইভাবেই চলছে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে রাজনীতি। এই রাজনীতি ভবিষ্যৎ কি তা মানুষ দেখতেই পাবেন।
অন্যদিকে এই বিষয়টি নিয়ে যখন আমরা জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের সঙ্গে কথা বলি, তখন তিনি বলেন, সঞ্জয় সিং এখনো তৃণমূলে যোগদান করেননি, তিনি বিজেপিতেই রয়েছেন।