অবতক খবর,২২ মার্চ,মলয় দে,নদীয়া:- করোনার প্রকোপে টানা লকডাউন এর জেরে কার্যত নুন আনতে পান্তা ফুরিয়েছিলো হাজারো অভাবীর সংসারে ।বাইরের রাজ্যে এ বাংলার প্রচুর শ্রমিককে ফিরে আসতে হয়েছিল বাধ্য হয়েই নিজের নিজের বাড়িতে। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরো ভয়ানক হয়ে ওঠায় করোনা কিছুটা স্থিতিশীল হলেই আবারো তাদের এ বাংলা থেকে ফিরে যেতে হয়েছিল বাইরের রাজ্যে।
কারণ এ রাজ্যে নেই কোন কর্মসংস্থান, নেই কোনো রুটি রোজকার, তাই তাদের অল্প পয়সার বিনিময়ে আর্থিক অনটনে পাড়ি দিতে হয়েছিল ভিনরাজ্যে।
আর্থিক অনটনে এমনই এক যুবক গত দেড় বছর আগে তার সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে পাড়ি দিতে হয়েছিল সুদূর কেরলে। করা হলো না পড়াশোনা।সংসারের হাল টানতে তাকে চলে যেতে হল শ্রমিকের কাজ করতে ভিন রাজ্যে।আর সেখানে ঘটলো সেই যুবকের সাথে নির্মম পরিণতি. কেরল রাজ্যে একটি পুরনো বিল্ডিং ভাঙতে গিয়ে, সেই বিল্ডিং চাপা পড়ে মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটলো নদিয়ার ধুবুলিয়া থানার রুকুনপুর গ্রামের বছর কুড়ির যুবক ওয়াসিম শেখের।
আর সেদিন থেকেই ওয়াসিমের পরিবার থেকে শুরু করে গোটা পাড়ায় উঠেছে কান্নার আর্তনাদ।
তবে পাড়ার এই ফুটফুটে ছেলেটির মর্মান্তিক পরিণতির খবর মিলেছিলো গত শুক্রবার আনুমানিক সকাল দশটা নাগাদ।ওয়াসিমের এই মর্মান্তিক পরিণতি আগের দিন রাতে তার মায়ের সাথে শেষ কথা হয়েছিলো বলেই জানা গেছে পরিবার সূত্রে। ওয়াসিমের শেষ ইচ্ছে ভিডিও কল করে দেখতে চেয়েছিল পরিবারের সকলকে। মোবাইলের প্রযুক্তি মা বুঝতে না পারায় বলেছিল অন্য একদিন ভিডিও কলে কথা হবে, কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস তা আর হয়ে উঠলো না তার ভিডিও কল। তার আগেই তাঁকে না ফেরার দেশে চলে যেতে হলো তাও আবার মর্মান্তিকভাবে।
প্রশ্ন এটাই কেন আমাদের বাংলার ছেলেদের যেতে হচ্ছে বাইরের রাজ্যের কর্মসংস্থানের খোঁজে কেনো নেই এ রাজ্যের কর্মসংস্থান? কেনো নেই রুটি রোজকার? এমনই প্রশ্ন প্রত্যন্ত গ্রামের থেকে রাজ্যের বাইরে কাজ করতে যাওয়া প্রায় সকল পরিবারের।