অবতক খবর: মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট।এ বিষয়ে জবাবদিহি করার জন্য মণিপুরের পুলিশ মহানির্দেশক (ডিজি)-কে তলব করেছে সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ স্পষ্ট ভাষায় বলেছে, ‘পুলিশ মণিপুরের পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি হারিয়েছে।’ সোমবার দুপুর ২টোর মধ্যে সশরীরে মণিপুর পুলিশের ডিজিকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।
গত তিন মাসের হিংসাত্বক ঘটনাগুলির তদন্তে মণিপুর পুলিশের চরম গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেপি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ।
জানা গিয়েছে, গত তিন মাসে মণিপুরের হিংসায় রাজ্য জুড়ে ৬,০০০-এর বেশি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। খুন হয়েছেন দেড়শোর বেশি মানুষ। এখনও ঘরছাড়ার সংখ্যা ৬০ হাজারের ওপর। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে হাজার হাজার বাড়ি ঘর। তবুও গ্রেফতারির সংখ্যা ‘অত্যন্ত কম’ হওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছে শীর্ষ আদালত।
গত ৩ মে থেকে উত্তপ্ত হয় মণিপুর। অশান্তির শুরু ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে। সে দিন রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকায় জনজাতি গোষ্ঠীভুক্ত কুকিদের সঙ্গে মেইতেইদের সংঘর্ষ শুরু হয়। দু’সম্প্রদায়েরই বহু মহিলা নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ। এর মধ্যে গত ১৯ জুলাই দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘোরানোর ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। যদিও সেই ঘটনায় সাত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে মণিপুর পুলিশ। ওই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।
দুই নির্যাতিতা সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছেন, সিবিআই বা মণিপুর পুলিশের তদন্তে তাঁদের আস্থা নেই। আদালতের পর্যবেক্ষণে বিশেষ তদন্তকারী দল গড়ে তদন্তের আর্জি জানান তাঁরা। মঙ্গলবার কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা শীর্ষ আদালতকে জানান, এখনও পর্যন্ত মণিপুরের হিংসার ঘটনায় মোট ৬,৫২৩টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। কঙ্গপোকপি জেলায় বর্বরোচিত ঘটনায় পুলিশ এক নাবালক- সহ সাত জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর পরেই হিংসার ঘটনাগুলির তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে মণিপুর পুলিশকে ভৎর্সনা করে সুপ্রিম কোর্ট।
মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই উভয়কক্ষেই ঝড় তুলেছে বিরোধীরা। মণিপুরের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করে সংসদে বিক্ষোভ জারি রেখেছেন ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা।