অবতক খবর,১৮ সেপ্টেম্বর,বাঁকুড়া :- ‘মাকে খেতে দেওয়া হয় পোড়া রুটি’, দশোভূজা নয় চর্তুরভূজা বিশালক্ষী মায়ের ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস আজ আপনাদের শোনাবো।

তখন বিষ্ণুপুরের মল্ল রাজাদের রাজত্ব শেষ তার ঠিক কয়েক বছর পর 1832 সালে তৎকালীন বর্ধমানের রাজা উদয়চাঁদ মেহেতাব রাজত্ব করতেন। বর্ধমানের পাশাপাশি বাঁকুড়া জেলা জয়পুর থানার রাউৎক্ষণ্ডা পরগনা ছিল বর্ধমান রাজা উদয়চাঁদ মেহতাবের আওতায় বছরান্তে একবার রাজামশাই বাঁকুড়া জেলায় আসতেন খাজনা আদায়ের জন্য। তখন রাজা মশাইয়ের বাগদি পরিবারের 2 লেঠেল ছিল রাউৎখণ্ডে 2 লেঠেল রাজামশাইকে গোটা পরগণা ঘুরিয়ে খাজনা আদায় করে আবার রাজা মশাইকে সযত্নে বর্ধমানের দিয়ে আসতেন। এই লাঠিয়ালদের নিষ্ঠা ও সততা দেখে রাজামশাই তাদের আটপৌরে উপাধি দেন। যদিও বর্তমান প্রজন্ম এই উপাধি ব্যবহার করেনা। এই উপাধি রয়েছে শুধু ইতিহাসের পাতায়।একদিন রাজামশাইকে স্বপ্নাদেশ দেন মা দূর্গা। স্বপ্নাদেশে মা দুর্গা জানান,রাউৎখণ্ডে তার জমিদারি তালুক বাঁচানোর জন্য রাউৎখণ্ডে বিশালাক্ষী মূর্তি স্থাপন করতে হবে ।
বিশালাক্ষী একটি হিন্দু দেবী। তিনি শিবের স্ত্রী সতীর এক রূপ। ভারতের বারাণসী শহরের বিশ্বনাথ মন্দিরের পশ্চাদে মীরঘাটে বিশালাক্ষী দেবীর প্রধান মন্দিরটি অবস্থিত। হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী এই মন্দির পুরাণে উল্লিখিত ৫১ শক্তিপীঠের অন্যতম।
পরদিন সকাল বেলায় রাজামশাই হাজির হন রাউৎখণ্ডে এবং বাগদী পরিবারের 2 লেঠেলকে নিয়ে তৈরি করে চতুর্ভূজা মা বিশালাক্ষী মূর্তি প্রথম বছরে রাজারও উপস্থিতিতে ধুমধাম করে মায়ের পুজো করা হয় তারপর রাজামশাই এই বাগদী পরিবারের হাতে মায়ের দেখভালের দায়িত্ব তুলে দেন তারপর থেকেই এই বাগদি পরিবার বংশ পরম্পরায় চতুর্ভূজা মা বিশালাক্ষী পুজো করে আসছে দুর্গা পুজোর পাঁচটা দিন পুরনো সেই ইতিহাস কে মাথায় রেখেই আজও মন্দিরে বেজে ওঠে উলুধ্বনি কাশর ঘন্টা।

বর্তমান বাগদী পরিবারের সদস্যরা জানান, আগে তালপাতার ছাউনিতে মায়ের পুজো হত। এর পর গ্রামবাসীদের ও সরকারি সহযোগিতায় তৈরি হয়েছে মায়ের কংক্রিটের মন্দির। আর এখানেই এখন পুজো হয় ধুমধাম করে। যেহেতু মা বিশালাক্ষী বৈষ্ণবী ছিলেন, সেই কারণে কোনরকম পশু বলির প্রথা এখানে নেই।