মিথ্যেকথা
তমাল সাহা

লোকে শুধু শুধু মিথ্যে বলে।
দুনিয়াটা নাকি অবিশ্বাসী মানুষে ভরে যাচ্ছে!
আমার মন এখন খুব ভালো হয়ে যায়
বাইরে বেরুলেই দেখি ক্রমাগত বিশ্বাসী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।
প্রচুর মানুষের হাতে হলুদ সুতো লাল সুতো বাঁধা।

শিবপুকুরের পাশেই লিঙ্গরাজ মন্দির।
সোমবার বাবার মাথার জল ঢালবার ঢল নেমেছে
মঙ্গলবার যাচ্ছে জয় বজরংবলী বা মা মঙ্গলচণ্ডীর চত্বরে।
টকটকে বিশেষ হলেদেটে লাল সিঁদুর দেখলে মন শুদ্ধ হয়ে যায়।
বুধবার সিদ্ধিদাতা গণেশ রয়েছে
বৃহস্পতিবার তো ঘরে ঘরে লক্ষ্মী আছেই
শুক্রবার আছে জয় সন্তোষী মাতাজি
শনিবার বড় ঠাকুরকে কি আর ঘাটানো যায়? বারের পুজো বলে কথা!
মানুষের বিশ্বাস ক্রমাগত বেড়ে যাচ্ছে
আর রাষ্ট্র চালকদেরও। তাই তারা সরকারি কোষাগার থেকে পুজোর জাঁকজমকে ধর্মীয় আচরণে হাজার হাজার টাকা অনুদান দিচ্ছে।

কবিতা বলে,
চারিদিকে এতো বিশ্বাসী মানুষের ভিড়!
ভোটের বিশ্বাসে কত মানুষ খুন হয়ে গেল!
বেটি বাঁচাও- এর বিশ্বাসী স্লোগান–
ধর্ষিতা মেয়েগুলি দাহ্য পদার্থ হয়ে যায়!
বিশ্বাস কতদূর ছড়িয়ে পড়েছে, দেখো।
তুমি তো এখনো আমাকে বিশ্বাস করতেই শিখলে না!

মনটাকে এখনো মন্দির বানাতে পারোনি।
তোমার এতো অবিশ্বাস! দেখো, ঠাকুর তোমায় ঠিক পাপ দেবে। এই পাপী মানুষটাকে রেখে আমি কোথায় যাই!

বিশ্বাসে মন্দির তৈরি হচ্ছে অযোধ্যা নগরে
বিশ্বাসে মন্দির তৈরি হচ্ছে সমুদ্র কিনারে!
মানুষ মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে
বিশ্বাসী মানুষের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়ে যাচ্ছে…