অবতক খবর,১২ ফেব্রুয়ারি: দীর্ঘ টানাপোড়েনর পর মুকুল রায় বিজেপিতেই রয়েছেন বলে জানিয়ে দিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বিধানসভায় শুনানি চলছিল। সেখানে বিমান বলেন, “মুকুল রায় আছেন বিজেপিতেই।”
দীর্ঘ শুনানির পর এ দিন মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে জমা পড়া পিটিশনও খারিজ করে দিয়েছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ। বিমান বলেন, “পিটিশনের পক্ষে যথেষ্ট পরিমাণে প্রমাণ জমা দিতে পারেননি আইনজীবীরা। সেই কারণেই পিটিশন খারিজ করা হয়েছে।” এ দিকে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অধ্যক্ষের রায়ই চূড়ান্ত।”
গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের পর বিজেপি ছেড়ে সপুত্র তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন ঘটে মুকুলের। তার পর রাজ্য সরকারের তরফে তাঁকে বিধানসভায় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যানও নিযুক্ত করা হয়। সাধারণত বিরোধী দলের বিধায়কদেরই পিএসই-র (PAC)মাথায় রাখা হয়। বিজেপি-র তরফে সেই মর্মে ছয় বিধায়কের নামও সুপারিশ করা হয়েছিল। তার পরেও মুকুলকে কেন পিএসি-র মাথায় বসানো হল, তা নিয়ে দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে।
যদিও সরকারের তরফে যুক্তি দেওয়া হয় যে, পিএসি-তে মুকুলের মনোনয়নের প্রস্তাবক এবং সমর্থক ছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবং তৃণমূলের দুই বিধায়ক। কিন্তু বিজেপি-র প্রতীকে জয়ী হয়েও মুকুল যখন তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, সেখানে তাঁকে কী ভাবে বিরোধী দলের প্রতিনিধি হিসেবে পিএসি-র মাথায় বসানো হল, এই নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিজেপি। দলত্যাগ বিরোধী আইনে মুকুলের বিধায়ক-পদ খারিজের জন্য বিধানসভার স্পিকারের কাছে আবেদন করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
সেই নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে টানাপোড়েন চলছিল। শেষ মেশ শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে বিধানসভায় শুনানি করেন বিমান। সেখানেই তিনি জানিয়ে দেন যে, মুকুল এখনও বিজেপি-তেই রয়েছেন। এ যাবৎ দীর্ঘ শুনানি-পর্বে মুকুল এবং তাঁর আইনজীবীরাও বরাবরই দাবি করে আসেন যে, কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক বিজেপিতেই রয়েছেন।
এ দিকে, বিমানের উপর ভরসা না করে ইতিমধ্যেই মুকুলের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে বিজেপি। তাতে বিষয়টি নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব সিদ্ধান্ত নিতে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকারকে নির্দেশ দেয় শির্ষ আদালত। সেই সময় শুভেন্দু টুইটারে লেখেন. “ন্যায়ের জয় হল। সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণ। মুকুল রায়ের দলত্যাগের প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার জন্য মাননীয় স্পিকারকেও ছেড়ে দেয়নি।”