অবতক খবর, সংবাদদাতা, 26শে জুলাই :: মুর্শিদাবাদ জেলার মানুষ অধির কে আগেই বিদাই জানিয়েছেন, এতদিন রাজ্যে অধীর ম্যাজিক বা রবিনহুড সহ বিভিন্য খ্যাতি ছিল সেসব ঘুচিয়ে দিয়েছে জনগণ। তার পাশে আর কেউ নেই, এবার বহরমপুর থেকেও গুড বাই জানাবো আমরা। এই দাবি করেছেন অধির চৌধুরীর 35 বছরের রাজনৈতিক সঙ্গী ও মুর্শিদাবাদের প্রাক্তন কংগ্রেসের মুখপাত্র ও বর্তমানে মুর্শিদাবাদ জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের কো-অর্ডিনেটর অশোক দাস। তাঁর একান্ত সাক্ষাৎকারে অবতাক খবর কে তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে লুপ্তপ্রায় কংগ্রেস এবং মৃতপ্রায় সিপিএম পার্টি কোনো ভাবে এক ওপরের হাত ধরে বাঁচার চেষ্ঠা চালাচ্ছে। বর্তমানে মুর্শিদাবাদ জেলায় অধীর চৌধুরী তার নিজের পায়ের তলার মাটি হারিয়েছেন। কোনোক্রমে এবারের লোকসভা নির্বাচনে তিনি জয়যুক্ত হয়েছেন। তবে 2021শে নির্বাচন এক্কেবারে ফিনিশ হতে যাবেন।
অধীর চৌধুরীর বার্তা বাহক আপনি ছিলেন। আজ অধীরের বিরুদ্ধে এত রাগ দ্বেষ কেন?
অশোক বাবু দাবি করেন যে সিপিএমের বিরুদ্ধে লম্বা-চওড়া কথা বলেছিলেন অধীর , সেই সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এবং বিজেপি কে সঙ্গে নিয়ে এখন চলছেন। কিন্তু মুর্শিদাবাদের মানুষ কেবল মাত্র বামপন্থীদের সঙ্গে লড়াই করার জন্যই অধীর চৌধুরীর পাশে দাঁড়িয়েছে। যতদিন অধীর বামপন্থীদের বিরুদ্ধে লড়েছে ততদিন মুর্শিদাবাদের জনতা ও আমরা তার পাশে থেকেছি কিন্তু নিজের স্বার্থে যখন অধীর বামপন্থীদের হাত ধরে হাঁটতে শুরু করলেন, তখনই আমরা তাকে বিদাই দিয়েছি। অশোক বাবু বলেন এটা ঠিক নয় যে আমরা তাকে ত্যাগ করেছি বরণ অধির আমাদের সকলকে ত্যাগ করে বামপন্থীদের হাত ধরেছেন।
অধীর চৌধুরীর সঙ্গে 35 বছর ধরে সঙ্গে থেকে বামবিরোধী রাজনীতি করে আজ বামপন্থীদের আমরা গুনগান করতে পারবো না যেটা অধীর চৌধুরী করছেন। তিনি দাবি করেন যে ” আমার ছাত্রজীবন থেকেই লড়াইটা ছিল মার্কসবাদের বিরুদ্ধে বামপন্থীদের বিরুদ্ধে। আমি সুভাষচন্দ্র বসু এবং স্বামী বিবেকানন্দের নীতি আদর্শে চলি।” তার দাবি অধীর এখন আমাদের থেকে মুর্শিদাবাদের জনগণের মন থেকে সরে গেছেন।
অশোক দাসের দাবি 1980 সালে অধীর চৌধুরী কোথাও আশ্রয় না পেয়ে এদিক-ওদিক ঘুরে কংগ্রেসের আশ্রয় নেয় এবং আমরা তাকে আশ্রয় করে দিলাম। কিন্তু তিনি যে সিপিএম-এর বিরোধিতা করে জননেতা হয়ে উঠেছিল সেই সিপিএম-এর হাত ধরে তিনি তার দুকূল হারিয়ে ফেললেন। অধীর আর সিপিএম-এর 34 বছরের অপশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করা নেতা নেই তিনি একজন সিপিএম-এর গুনগান কারী ধোকাবাজ হয়েউঠেছেন।তাই আর অধির নয় ,নয়, নয় ।
মুর্শিদাবাদে প্রায় সকল তার সংগ ত্যাগ করেছে আগেই। এখন আসনন্ন নির্বাচনে বহরমপুরবাসীও তাকে গুডবাই বলবেন। বহরমপুর কেন্দ্রে অধীর চৌধুরী যাকেই প্রার্থী করুন না কেন তাকেই তৃণমূল পরাজিত করবে। আমি নিজে পরাজিত করব। মানুষকে যারা অপমান করে, মানুষকে যারা বোকা-মূর্খ ভাবে তাদের মানুষ ছুড়ে ফেলে দেয়। বহরমপুরে অধীর চৌধুরীর আর কোন জায়গা নেই। তিনি মুর্শিদাবাদে ঘর সংসার ও ত্যাগ করে দিল্লিতে গিয়ে ঘর-সংসার শুরু করেছেন তাই আমরাও চাই এবার তিনি এক্কেবারে বিদাই নিন, দিল্লিতে গিয়ে সুখে ঘর-সংসার করুন, তার জন্য আমার ও সমগ্র মুর্শিদাবাদের মানুষের শুভকামনা রইল। ওনাকে আমরা সকলে গুুড বাই জানাচ্ছি।
এত গোষ্ঠী কলহ কি ভাবে ঘোচাবেন ?
মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের গোষ্ঠী কলহ সম্পর্কে অশোক বাবু বলেন, বিষয়টি নতুন পুরনো বলে কিছু নয়, তৃণমূলে সকলকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তারুনতুর্কি সৌমিক যে যেমন দল গুরুত্ব দিয়েছে তখন সুব্রত সাহা ও খলিলুর রহমান সাবেবদের মত প্রবীণদের ও দল সমান সম্মান ও দায়িত্ব দিয়েছে। কিছু মানুষ আছেন যারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে খবর তৈরি করছেন। যেমন ধরুন প্রতিদিন একজনকে ৫০০ টাকার একটি নোট ধরিয়ে বলুন যে ২৫ টি চায়ের দোকানে গিয়ে বলতে যে তৃণমূলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলছে। ঠিক এইরকমই কাজ করছে অধীর চৌধুরী। কারণ তার কাজ করার ধরন গুলি আমার থেকে ভালো আর কেউ ভাল ভাবে জানেনা। এই কৌশলটা বাজারে চালু করেছেন অধীর চৌধুরী। তবে এখন এই কৌশল মুর্শিদাবাদের মানুষ ধরে ফেলেছে তাই এই কৌশলে অধীর তৃণমূলে ফাটল ধরতে পারবেননা।
আপনি স্বামীজি ও রামপ্রসাদের শিষ্য তখন ভজন কীর্তন না করে এত রাজনীতি কেন?
মুর্শিদাবাদ বর্ষীয়ান নেতা অশোক দাস জানান স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন মানুষের সেবা করতে। তিনি বলেছেন মানুষের সেবার মাধ্যমে ঈশ্বরের সেবা হয়। সুতরাং স্বামীজি রাজনীতি করতে বারণ করেনি। রাজনীতির মাধ্যমেও মানুষের সেবা করা যায়। তাই করছি। আগামী নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে অধীর চৌধুরীকে আমরা গুডবাই বলব। আর ২২-এ ২২ আমরাই করে দেখাবো।