অবতক খবর, হক জাফর ইমাম, মালদা :: সম্প্রীতির নজির মুসলিম গৃহবধূ সূর্য পূজাতে কলাগাছ শাড়ি ভোগরাগ দান করে। পূজার সূর্যোদোয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত উপাস থাকলেন তিনি।সম্প্রিতির এই নিদর্শন দেখা গেলো বাঙ্গীটোলার মিশ্র পরিবারের সূর্য পূজা ঘিরে । ধর্মের হানাহানি সাম্প্রদায়িক শক্তি যখন গোটা ভারতবর্ষকে গ্রাস করছে, যখন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদি ও কাজিয়া তেই ব্যাস্ত ঠিক তখনই মোথাবাড়ির বাঙ্গীটোলা গ্রামে সূর্য পূজাকে কেন্দ্র করে দেখা গেলো দুই ধর্মের সম্প্রীতির বার্তা ।মুসলিম গৃহবধূর দেওয়া কলাগাছ ও ভোগরাগের মধ্যে দিয়ে হয়ে গেলো সূর্য পূজা ।
প্রতি বছর মাঘ মাসের প্রথম রবিবার এই সূর্যপূজার আয়োজন হয়। গ্রাম বাঙলার বিভিন্ন গ্রামে এই পূজা হয়। বাঙ্গীটোলা গ্রামে এই পূজা হয় মিশ্র পরিবারে।গ্রামের সব মহিলা ও পুরুষ সারা দিন উপবাস থেকে সূর্য দেবের আরাধনা করে। মাটির থল বানিয়ে তিনটি কলাগাছ পুতে সূর্যদেবের আরাধনা করা হয়। কথিত আছে এই পূজার পর কলাগাছের ফল খেয়ে মানত করলে মনের আশা পুরণ হয়।এলাকার হিন্দু মুসলমান এবাই এই বিশ্বাস করে। বাঙ্গীটোলা গ্রামের পাশেই গোবিন্দগঞ্জ গ্রাম।এই গ্রামের গৃহবধূ আফসানা খাতুন।
আফসানা তেরো মাসের সন্তান তৌফিক আহম্মদ । বাচ্চাটির জন্মের পর নানা অসুখে জর্জরিত থাকতো । কিছু দিন আগে স্বপ্নাদেশ পেয়ে মিশ্র পরিবারের দূর্গা মন্ডবে এসে আফসানা মানত করে যে ছেলে ভালো হলে কলাগাছ দিয়ে সারা দিন উপহাস থাকবো । সেই মতো আজ সারা দিন রোজা থেকে কলাগাছ ও ভোগ রাগ দেয় আফসানা ।
আফসানা ও আহম্মদের সুখের সংসার । তাদের এক ছেলে বয়স তেরো মাস। জন্মের পর থেকে অসুস্থ মাঝে মধ্যে খিচুনি হয়।শত চিকিৎসাতেই ভালো হয় না । গত বছর আমি এই সূর্য পূজার মানত করি।তার পর মালদা তে ডাক্তার দেখাতে শুরু করি। এর পর শিশু টি ভালো হয়।এখন ভালো আছে।তাই শিশুর মা সারা দিন উপবাস করে কলাগাছ দান করে এই পূজাতে অংশগ্রহণ করে ।
আফসেনা জানায় ” আমাদের ছেলেরা ছোটো থেকেই অসুস্থ ছিলো । আমরা বাড়ির বড়দের কাছে শুনেছি যে বাঙ্গীটোলার সূর্যপূজাতে কলাগাছ দিয়ে উপবাস করলে ভালো হয়ে যাবে । আমরা তাই উপবাস করে কলাগাছ দান করে এই পূজাতে অংশগ্রহণ করেছি । আমরা সূর্যকে বিশ্বাস করি । আমাদের বিশ্বাস আমাদের ছেলেরা ভালো থাকবে ।”