অবতক খবর ,রাজীব মুখার্জী, হাওড়া :- করোনায় মৃতের দুধরনের রিপোর্ট ঘিরে বিভ্রান্তি। মৃত রোগীর প্রথমে রিপোর্ট পজিটিভ এলেও পরে আসে নেগেটিভ। এই নিয়ে মৃতের পরিবার জেলা স্বাস্থ্য দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে চলেছেন। হাওড়ার পিলখানা নন্দ ঘোষ রোডের বাসিন্দা শীতল প্রসাদ সাউ(৭৮) শ্বাসকষ্ট ও কাশি নিয়ে এই মাসের ১৩ তারিখে ভর্তি হন শিবপুরের জৈন হাসপাতলে। কোরোনা সন্দেহে ওই রোগীকে ওইদিন হাসপাতালের আইসলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এর পরদিন অর্থাৎ ১৪ অক্টোবর তার লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর ১৫ তারিখে হাসপাতালের তরফে জানানো হয় ফের নমুনা সংগ্রহ করতে হবে ওই রোগীর। সেই অনুযায়ী গত ১৫ তারিখ দ্বিতীয়বার লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে সরকার অনুমোদিত ওই একই ল্যাবে পাঠানো হয়। তার পরদিন অর্থাৎ ১৬ অক্টোবর দ্বিতীয় পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ওইদিনই তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে। রাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই রোগীকে কোভিড হাসপাতাল সঞ্জীবনে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
সেই মত রোগীর পরিবারকেও জানানো হয়। গভীর রাতে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় ওই রোগীর। এরপর ১৭ অক্টোবর করোনা নির্দেশিকা অনুযায়ী মৃতের পরিজনদের হাতে শিবপুর শ্মশান ঘাটে দাহ করা হয় মৃতদেহ। কিন্তু অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওইদিন রাতে রোগীর পরিজনদের কাছে প্রথম পরীক্ষার রিপোর্ট আসে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী জানানো হয় করোনা নেগেটিভ। এরপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতের পরিবার। ওদের অভিযোগ হাসপাতালে গাফিলতিতে মৃত্যু হয়েছে শীতল বাবুর। তাদের দাবি, তাদের হাতে পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী হাসপাতালে ভর্তির সময় করোনা আক্রান্ত ছিলেন না শীতল বাবু। হাসপাতালে অবহেলার কারণে ভর্তির পরে পজিটিভ হয়ে যায় তার।
অন্যদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, তারা সরকার অনুমোদিত যে ল্যাব থেকে টেস্ট করান সেখান থেকে তাদের প্রথম পরীক্ষার রিপোর্ট জানানো হয় ‘ইনকনক্লুসিভ’। অর্থাৎ প্রথম পরীক্ষা থেকে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। অথচ ওই রিপোর্টে রোগীর পরিজনদের জানানো হয় ‘নেগেটিভ’। এর থেকেই বিভ্রান্তির সূত্রপাত। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই বিভ্রান্তির দায় সরাসরি ল্যাব কর্তৃপক্ষের ওপর চাপিয়েছেন।
এই ঘটনায় জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস জানান, তিনি গোটা ব্যাপারটি খোঁজ নিয়ে খতিয়ে দেখবেন।