অবতক খবর,১০ জুলাই,মলয় দে নদীয়া :-মোবাইলে নিখোঁজ বাবার খবর দেখে রাম লক্ষণ দুই ভাই গতকাল রাতেই উপস্থিত হন শান্তিপুরে । জানতে পারেন শান্তিপুর পৌরসভার তত্ত্বাবধানে চলা নিরাশ্রয়ীদের সরকারি আশ্রয়স্থল নতুনহাট দিশারীতে রয়েছে তাদের বৃদ্ধ বাবা যিনি অভিমান করে আজ থেকে ১৫ দিন আগে বেরিয়ে ছিলেন কাঁচরাপাড়া ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রপল্লীর নিজস্ব বাড়ি থেকে।

বিষয়টি থেকে অবশ্য জানানো হয় বিষয়টি পুরসভার চেয়ারম্যান সুব্রত ঘোষের সাথে যোগাযোগ করার জন্য, দুই ভাই গতকাল রাতে চেয়ারম্যানের বাড়িতে পৌঁছালে তিনি প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র সহ আজ সকালে আসতে বলেন দিশারীতে।

সেখানে আজ 85 বছরের বৃদ্ধ রুইদাস ধরের সাথে, চেয়ারম্যান নিজে কথা বলে অভিমান ভাঙান। রাজি করেন বাড়ি যাওয়ার জন্য। অপরদিকে বাবাকে শ্রদ্ধা এবং যত্নের সাথে রাখার বিষয়ে দুই ছেলেকে নির্দেশ দেন তিনি । অন্যদিকে ছেলেরাও তাদের কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করে জানান এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না ভবিষ্যতে।

সেই মর্মে লিখিত দিয়ে দুই ভাই বাবার সাথে দিশারীতে এক টেবিলে বসে খেয়ে মহা আনন্দে ফিরিয়ে নিয়ে গেলো বাবাকে।

এ প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান সুব্রত ঘোষ বলেন সাম্প্রতিক কিছুদিন আগে একটি বাচ্চা নিয়ে এক মা বর্ধমান থেকে শান্তিপুরের পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন পারিবারিক অশান্তির জেরে, তাকেও একইভাবে বুঝিয়ে বাপের বাড়ি এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের ডেকে মীমাংসার মধ্যে দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

বর্তমানে বৃদ্ধ বাবা মার প্রতি এ ধরনের আচরণ অমানবিক, তাই এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কাছে চেয়ারম্যান অনুরোধ জানান ছোটবেলায় অনেক বায়না দুষ্টুমি সহ্য করে বাবা মায়েরাই বড় করে তোলে, আর সেই বাবা মা পথে পথে ঘুরলে সন্তানের কখনো মঙ্গল হয় না। তবে দিশারী সম্পর্কে তিনি বলেন, অত্যন্ত মানবিক এবং প্রয়োজনীয় একটি ব্যবস্থা রয়েছে এখানে ম্যানেজারসহ চার কর্মীর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে উনাদের মতন অনেক বৃদ্ধ মানুষজন কে শারীরিক চিকিৎসা করিয়ে এবং তাদের সেবা যত্ন করে বাড়িতে ফেরত পাঠানো সম্ভব হচ্ছে।

নিয়ম অনুযায়ী শহর তো বটেই মানবিক কারণে গ্রামের ক্ষেত্রেও কিছু কিছু এ ধরনের বেশ কিছু নিদর্শন রয়েছে তবে শান্তিপুরের বেশ কিছু সচেতন নাগরিক দিশারির শুভাকাঙ্ক্ষী মানুষজন এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত এ ধরনের কাজ করে চলেছেন আর তার ফলেই ক্রমশ সুদূরপ্রসারী হচ্ছে দিশারির নাম।