রঙ। এবার রঙ নিয়ে টুকুনের সঙ্গে আমার কথাবার্তা। রঙ ও যে একটা বিষয় তা টুকুন জানালো। শুনুন।

রঙ
তমাল সাহা

আজ রবিবার। বিকেলে চা খাচ্ছি। মেয়ে এলো।

বাবা! রঙ বিষয়ে তুমি কিছু জানো?

আমি বলি রঙের বিভিন্ন নামি-দামি কোম্পানি আছে। তারা বাড়ি ঘর, জানালা দরজার রঙ তৈরি করে।
তুই যে রঙ চাইবি, সে রঙই বানিয়ে দেবে।

মেয়ে বলে, ও তুমি বলছো কোম্পানিগুলো রংবাজ? ওরা রংবাজিতে খুব দক্ষ?

আমি বলি রংবাজ হবে কেন? ওরা তো রঙ নির্মাতা।

মেয়ে বলে,
বাবা জানো, সবুজ রঙ চোখের পক্ষে ভালো। সবুজ খুব দামী রঙ, এ আমি জানি। গাছের পাতা সবুজ। সবুজ পৃথিবী— আমরা তো চাই। কিন্তু এ রঙটি দোআঁশলা রঙ। নীল আর হলুদ মিলিয়ে সবুজ রঙ তৈরি হয়।

আমি বলি, তবে গেরুয়া রঙ?

মেয়ে বলে, ওটাও দোআঁশলা রঙ। মানে লাল আর হলুদ মিলিয়ে তৈরি হয়। এর একটা নির্দিষ্ট অনুপাত আছে। এই রঙটি কিন্তু ত্যাগের প্রতীক। এর সঙ্গে দাঙ্গা, খুনের কোনো সম্পর্ক নেই। জাতীয় পতাকায় সবুজ রঙটি নীচে আছে আর গেরুয়া রঙটি উপরে আছে। এই দুটি রঙ দোআঁশলা হলেও মানবজীবনে এদের গুরুত্ব রয়েছে।

রবীন্দ্রনাথ ‘সবুজের অভিযান’ লিখেছেন। রবীন্দ্রনাথ ‘ভাগোয়া ঝান্ডা’র কথা বলেছেন।

আমি বলি, রঙ তো রঙ। রঙের এত ব্যাখ্যা দিচ্ছিস কেন?

মেয়ে বলে, শোনো বাবা! লাল রঙ মৌলিক রঙ। এটা সাচ্চা রঙ। এটা দোআঁশলা নয়। এটা হিন্দু- মুসলিম শুধু বলবো না, দুনিয়াব্যাপী সমস্ত মানুষের ধমনীতে এই লাল রঙের উষ্ণ প্রবাহ রয়েছে।

রক্তের রঙ লাল।
শ্রমিকের রক্তনিশান, পূর্ব দিকে রক্তিম সূর্য, সবই লাল।
কেটে যাবেই দুঃসময়ের কাল
তিমির রাত্রি অভিযাত্রীরা হতেছে প্রস্তুত।
ঐ দেখো কাটছে অন্ধ প্রহর
বালার্কের হাতে রক্তিম সকাল।