অবতক খবর,১২ সেপ্টেম্বর,বাঁকুড়া:- শিক্ষার্থী দরদী শিক্ষকের অদম্য ইচ্ছাতেই পড়ুয়ারা পাচ্ছে বাড়ির কাজ ও শিক্ষা। সপ্তাহে একদিন করে পড়ুয়াদের গ্রামে গ্রামে গিয়ে কাজ দিয়ে আসছেন শিক্ষক। করোনার জেরে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ স্কুল,কলেজ। এই অবস্থায় পড়ুয়ারা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন বলে অভিমত শিক্ষক মহলের। সম্প্রতি স্কুল শিক্ষা দফতর অনলাইনে ক্লাস নিতে নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষকদের।
আদিবাসী অধ্যুষিত প্রান্তিক জনপদ হিড়বাঁধের তিলাবনীর ওই স্কুল এলাকা। ওই শিক্ষকের দাবি, গত ২রা আগস্ট স্কুলে অনলাইন ক্লাস শুরু হলে মাত্র দুজন যোগ দিয়েছিল তাতে। সেই থেকেই তার এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন তিনি। অধিকাংশ পড়ুয়ার অ্যানড্রয়েড ফোন না থাকায় হিড়বাঁধের তিলাবনী উচ্চ বিদ্যালয়ের দরদী শিক্ষক কমলাকান্ত হেমব্রম নিয়েছেন ওই বিশেষ উদ্যোগ।
কমলাকান্ত বাবু রোজ সকালে খাতড়া থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার সাইকেল চড়ে এলাকার সান্ডি, ভোজদা,বেলকানালী, তিলাবনী,বাউরিডিহা, জামডহরা,পলাশবনী সহ প্রায় ১৫টি গ্রামে ঘুরে ঘুরে এভাবেই পড়াচ্ছেন পড়ুয়াদের।তিনি জানিয়েছেন, পঞ্চম,ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর পড়ুয়াদের অঙ্ক ও শারীরশিক্ষা, দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের শারীরশিক্ষার অ্যাকটিভিটি টাস্ক গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দেন তিনি,পড়া বুঝিয়ে দেন ও আগের দেওয়া কাজের উত্তরপত্র জমা নেন।
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অসীম কর জানিয়েছেন, কমলাকান্ত বাবু স্থানীয় শিক্ষক। সব পড়ুয়াদের অনলাইন ক্লাসের উপযুক্ত ফোন না থাকায় উনার ওই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার। অভিভাবকদের মতে, ওই শিক্ষকের উদ্যোগ খুবই ভাল। আমাদের এই প্রত্যন্ত এলাকায় কারও কারও ফোন থাকলেও নেটওয়ার্ক ভাল থাকে না। তাই অনলাইন ক্লাস সম্ভব হয়নি। স্কুলে বাগান তৈরি সহ স্কুলের প্রতি যত্নও উনার ভাল। পড়ুয়াদের খেলা ধুলোতেও উৎসাহিত করতে তিনি বিশেষ উদ্যোগ নেন।
তাছাড়াও দরদী ওই শিক্ষক বই, খাতা, কলম, জ্যামিতি বক্স সহ বিভিন্ন শিক্ষা সামগ্রী কিনে দেন যে সব পড়ুয়াদের আর্থিক সমস্যা রয়েছে। বছর পঞ্চান্নর কমলাকান্ত বাবু খাতড়া শহর থেকে রোজ সকালে এভাবেই গ্রামে গ্রামে পৌঁছান। প্রায় শতাধিক পড়ুয়াকে তিনি এভাবেই পড়াচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। তাঁর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অভিভাবক থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ।