অবতক খবর,১৮ জুন,মলয় দে নদীয়া:-গতকাল সাতসকালে দুর্ঘটনার কবলে শিয়ালদহ গামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। ঘটনায় মৃত এবং আহতের সংখ্যা একাধিক। যদিও ওই ট্রেনে বাড়ি ফিরছিলেন নদীয়ার শান্তিপুরের থানার মোড়ের বাসিন্দা তপন বিশ্বাস এবং কমলা বিশ্বাস। এনারা স্বামী স্ত্রী। তারা গিয়েছিলেন ত্রিপুরায় তাঁদের মেয়ের বাড়ি।
সেখান থেকে আসার সময় এই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তারা। তবে সেখান থেকে আসার পর এখনো পর্যন্ত আতঙ্কের রেশ নিয়ে রীতিমতো ভয়েই দিন কাটাচ্ছেন তপন বাবু এবং তার স্ত্রী।তবে গতকালের সেই ভয়ানক অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে এখনও শিউরে উঠছেন তপন বাবু।তিনি জানাচ্ছেন কাল হঠাৎ সকালবেলায় ট্রেনে বাথরুমে গিয়েছিলেন।
তখনই হঠাৎ পেছনদিকে সজোরে ধাক্কা লাগার ফলে ঝাঁকুনি অনুভব হয়।ট্রেনের বগিতে তিনি ছিলেন এসি কম্পার্টমেন্টের বি ওয়ান কোচের একত্রিশ এবং ৩২ নম্বর সিটে। তবে এই ঘটনা ঘটার পরই রেলে উপস্থিত সাফাই কর্মীদের কে তিনি জানান বাইরে কি হয়েছে দেখতে? সাফাই কর্মীর বাইরে তাকিয়ে চক্ষু চড়ক গাছ হয়ে বলেন,ট্রেন থেকে চলে যান ভয়াবহ দুর্ঘটনায় রেলের সমস্ত বগি উল্টে গেছে।সেই সময় প্রাণ বাঁচাতে কোন রকমে তার স্ত্রীকে নিয়ে ট্রেন থেকে নেমে বেরিয়ে পড়ে তপন বাবু।
এরপর রেলের তরফ থেকে দেওয়া অ্যাম্বুলেন্সে করে পৌঁছন নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন। তারপর সন্ধ্যের দিকে তিস্তা তোর্সা ট্রেন দেয়া হয় আহতদের এবং ট্রেনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের কে একসাথে নিয়ে আসার জন্য।আর সেই ট্রেনে সেই অন্ধকার সময়ের স্মৃতি মাথায় নিয়ে বাড়ি ফেরেন তপন বাবু এবং তার স্ত্রী। তবে রেল কর্তৃপক্ষ আহত ব্যক্তিদেরকে যে ট্রেন দিয়েছিল সেখানে কোনরকম খাবারের ব্যবস্থা করেনি এমনকি প্রাথমিক চিকিৎসার ও কোনরকম ব্যবস্থা করেনি বলে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন ঘটনায় আহত তপন বাবু।
অপরদিকে তার স্ত্রী কমলা দেবী জানান তিনি বসেছিলেন আর তারপরেই ভয়ানক শব্দে রীতিমতো কেঁপে ওঠে কম্পার্টমেন্ট। তারপরেই হঠাৎ করে চোখের নিমেষে কি যে হয়ে গেল কিছুই বুঝতে পারলেন না। তারপর তার স্বামী চিৎকার করে ডাকতে তিনি কোন রকমে প্রাণ বাঁচাতে ট্রেন থেকে বেরিয়ে আসেন। তবে এখনো কাল সকালের সেই অন্ধকার সময়ের কথা মাথায় আসলে রীতিমতো শিউরে উঠছেন তিনি।
তবে বর্তমানে তারা দুজনাই কমবেশি আহত হয়েছেন এবং পরবর্তীতে শান্তিপুর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাবেন বলেও সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছেন।তবে রেলের তরফে যে অব্যবস্থা তার দিকেও প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে তপন বাবু এবং তার স্ত্রী।
এই দম্পতির বাড়ি ফিরে আসার পর শান্তিপুর থানার তরফে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং তাদের চিকিৎসার জন্য যথাযথ সাহায্য করবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর পাওয়া গেছে।