অবতক খবর,৪ সেপ্টেম্বর,ধূপগুড়ি: জলপাইগুড়ি থেকে এবার দু-জন পাচ্ছেন শিক্ষারত্ন সন্মান। দুজনই ধূপগুড়ির দুই স্কুলের শিক্ষক। পূর্ব মল্লিকপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমিত কুমার দে। এবছর তিনি মনোনীত হয়েছেন এই সম্মানের জন্য।

ডুয়ার্সের চা বাগিচা অঞ্চলের নাথুয়া হাট বানিয়া পাড়া চৌরাস্তা হাই স্কুল থেকে অমিত কুমার দে শিক্ষকতা শুরু করেছিলেন ১৯৯৩ সালের ১৮ই আগস্ট।

এরপর ২০০৬ সালে ডুয়ার্সের সবুজে ঘেরা গ্রাম পূর্ব মল্লিক পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছেন তিনি।

পূর্ব মল্লিকপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে আসার পর অমিত বাবু প্রত্যন্ত গ্রামে অবস্থিত এই স্কুলকে আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে রূপ দিতে তার নিরলস কাজ বিদ্যালয়কে এনে দিয়েছে অনেক স্বীকৃতি।

বিদ্যালয়ের মাথায় রয়েছে রাজ্যে সেরার মুকুট। তারই নিরলস পরিশ্রম ও সৃষ্টিশীল ভাবনা ছিল পূর্ব মল্লিকপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের জন্য রাজ্যের অন্যতম সেরা যামিনী রায় পুরুষ্কার প্রাপ্ত বিদ্যালয় হওয়ার উপহার। পরপর সাফল্য এসেছে তাঁর নেতৃত্বেই।

শিল্পের ছোঁয়া বিল্ডিং জুড়ে, স্কুল ক্যাম্পাস যেন ফুঁলের বাগিচা। রকমারি ফুল ফলের গাছ। ড্রাগনের মতো ফলের চাষ। ভেজস বাগান। বিদ্যালয়েই মাশরুম ফলিয়ে তা ছাত্র-ছাত্রীদের মিড ডে মিলের মেনুতে। এ যেন নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। বিদ্যালয়ে রয়েছে মেয়েদের জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ভেন্ডিং মেশিন। অত্যাধুনিক মানের শৌচাগার।

বিদ্যালয়ে রয়েছে মাতৃভাষা-স্মরক। প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক অভিভাবিকা থেকে শুরু করে গ্রামবাসী, শিক্ষক শিক্ষিকা- শিক্ষা কর্মী অংশগ্রহণ করেন জীবনদানে।
নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত বটে। নিয়েছেন গ্রাম পঞ্চায়েতের সাহায্য বসিয়েছেন সৌরবাতি। তৈরি করেছেন মিড ডে মিলের কাম ডাইনিং হল। বিদ্যালয়ে রয়েছে মিউজিয়াম, লোকজীবনের ঐতিহ্য ও ছাত্র-ছাত্রীদের হাতের কাজ রাখা হয়। ডুয়ার্সের থিম তৈরী করে একটা অডিটোরিয়াম তৈরী করেছেন। প্রকাশিত হয় বিদ্যালয়ের মুদ্রিত পত্রিকা ‘ডুডুয়া’। যার ফলে একজন দক্ষ প্রশাসক হিসাবে তাকে অসামান্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে।
গ্রামবাসীদের কথায়, এতদিন সাফল্য এসেছে বিদ্যালয়ের। আর এই বিদ্যালয়টি পেছন থেকে নেতৃত্ব দেওয়া প্রধান মানুষটাও আজ সাফল্য পেলো। খুশি আমরা গ্রামের মানুষ। সত্যি গ্রামের নামটা উজ্জ্বল করেছে বিদ্যালয় যার অবদান অমিত বাবুর।

আগামীকাল ৫ই সেপ্টেম্বর জলপাইগুড়ি মহকুমা শাসকের দপ্তরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সম্মান গ্রহণ করবেন তিনি। অমিতবাবু ছাড়াও এ বছরে জলপাইগুড়ি থেকে এই সম্মানে মনোনীত হয়েছেন ধুপগুড়ির বাসিন্দা বারঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বটতলী স্বর্ণময়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জয় বসাক। তিনিও একই দিনে সম্মান গ্রহণ করবেন।