বিনয় ভরদ্বাজ, অবতক খবর ,৩০মে :: করোনা রুখতে শুরু হয়েছে লকডাউন। কিন্তু বর্তমানে চতুর্থ পর্যায়ের লকডাউন প্রায় শেষের পথে। আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছে যে, সরকার বর্তমানে লকডাউন তুলে দিতে চলেছেন। দেশে যখন ৩০০ জন মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছিল, তখন দেশে শুরু হয়েছিল লকডাউন। বর্তমানে দেশে ১ লক্ষ ৭৪ হাজারেরও বেশি করোনা আক্রান্ত। মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৫ হাজার মানুষের। এমন অবস্থায় সরকার লকডাউন তুলে দিতে চলেছে। যা আগামী দিনে আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে।
দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সারা বিশ্বকে ছাপিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। করোনার ভয়াবহ রূপ দেখা এখনো বাকি। যা আগামী আগস্ট থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে দেখা দেবে বলে সতর্ক করেছেন কোভিড-১৯ হেল্থ টাস্কফোর্সের অফিসার ডাঃ ভি.রবি।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেল্থ নিউরো সায়েন্স এন্ড নিউরোলজি বিভাগের প্রধান এবং কর্নাটকের কভিড-১৯ এর নডেল অফিসার ডাঃ ভি.রবি এক দৈনিক ইংরেজি পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়ে দিয়েছেন যে, লকডাউন শেষ হওয়ার পর ভারতের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হওয়া শুরু হবে এবং অত্যন্ত দ্রুতগতিতে করোনা সংক্রমণ দেশে ছড়াবে। আগামী জুলাই মাস পর্যন্ত দেশে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ১৮ হাজারেরও বেশি ছাপিয়ে যাবে। আর আগস্ট মাস থেকে গোষ্ঠী সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করবে দেশে।
তিনি দেশবাসীকে সতর্ক করে জানিয়েছেন যে, গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হলে দেশের প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ আক্রান্ত হয়ে পড়বেন। তিনি সাক্ষাৎকারে আরও বলেছেন যে, দেশের ৯০ শতাংশ করোনা আক্রান্ত মানুষ জানতেই পারবেননা যে তারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। কারণ তাদের মধ্যে কোন লক্ষণ চাক্ষুষ করা যাবে না। তবে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ৫ শতাংশ মানুষের অক্সিজেনের সাপোর্ট লাগবে এবং শেষ ৫ শতাংশ মানুষের ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন পড়বে।
তিনি আরো বলেন, সংক্রমনের প্রভাব দেশে ডিসেম্বরের মধ্যে ভয়াবহ হয়ে উঠবে এবং দেশে মৃত্যুর হার ৩-৪ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। তিনি দাবি করেন যে, করণা মোকাবিলা করতে অনেক বেশি টেস্টের প্রয়োজন। কিন্তু দেশে তেমন পর্যাপ্ত কোনো ব্যবস্থা বা ল্যাব নেই যা খুবই চিন্তার বিষয়। ডাঃ ভি.রবি জানান,যে রাজ্যগুলি করোনা টেস্টের জন্য যত বেশি ল্যাব তৈরি করবে, এই রাজ্যে মৃত্যুর হার তত কম হবে।
কর্ণাটকে ইতিমধ্যেই ৩০টি জেলাতে ৬০টি ল্যাব তৈরি করে ফেলা হয়েছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে কর্নাটকে আরো ৭৫টি ল্যাব করতে পারবেন বলে তিনি দাবি করেছেন। তিনি পরিকাঠামো তৈরি করতে কর্ণাটক সরকারের সবরকম সাহায্যের ভুয়ষী প্রশংসা করেছেন। ডাঃ ভি.রবি জানিয়েছেন যে দেশের মানুষকে করোনা সংক্রমণ নিয়েই বাঁচতে শিখতে হবে। কারণ আগামী বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত করোনা ভ্যাক্সিনেশনের জন্য মানুষকে অপেক্ষা করতে হবে।
তিনি আরো জানান,দেশে করোনা সংক্রমণ ব্যাপক হারে বাড়লেও মৃত্যুর সংখ্যা তেমন দ্রুত বাড়বে না। তবে সারা দেশের মধ্যে গুজরাটের মৃত্যুর হার ৬ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে বলে তিনি সম্ভাবনা ব্যক্ত করেছেন।
তবে আমরা আবারও বারবার বলছি যে,আমরা কোনোভাবেই মানুষকে ভীতসন্ত্রস্ত করার জন্য এই সংবাদ পরিবেশন করছি না। আমরা চাইছি মানুষ সতর্ক হোন। সেটাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। কারণ সতর্কতাই একমাত্র এই মারণ রোগকে হারাতে পারে।