রাজীব মুখার্জী :: অবতক খবর :: হাওড়া :: আনলক ১- এ নিয়ম শিথিল হওয়ার পরও সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে হাওড়ার পাইকারি মাছ বাজারের ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘ দু’মাসের বেশি সময় ধরে লকডাউন ৷ বন্ধ ছিল পরিবহন ব্যবস্থা ৷ বন্ধ ছিল বাণিজ্য ৷ আর তারই প্রভাব পড়েছে মাছ ব্যবসায় ৷ তাই আনলক ১- এ নিয়ম শিথিল হওয়ার পরও সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন হাওড়ার পাইকারি মাছ বাজারের ব্যবসায়ীরা ৷ তাঁরা জানালেন, বর্তমানে রপ্তানি সামান্য বেড়েছে ঠিকই ৷ তবে, লকডাউন পরবর্তী পরিস্থিতিতে তা যথেষ্ট নয় ৷
হাওড়ার এই মাছ বাজার থেকে বিভিন্ন জেলার পাইকারি ব্যবসায়ীরা মাছ কিনে নিয়ে যান ৷ অসম, দিল্লিসহ বিভিন্ন রাজ্যে এই বাজার থেকে মাছ রপ্তানি হয় ৷ কিন্তু কোরোনার জেরে ভোল পালটে গেছে এই পাইকারি মাছ বাজারের ৷ জোগান ঠিক থাকলেও হচ্ছে না রপ্তানি । লকডাউন ও লকডাউন পরবর্তী পরিস্থিতিতে কতটা প্রভাবিত হাওড়ার পাইকারি বাজার ? লকডাউনের আগে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ মেট্রিকটন মাছ রপ্তানি হত এই বাজার থেকে ৷ লকডাউনে দিন প্রতি রপ্তানির পরিমাণ একধাক্কায় নেমে দাঁড়ায় ৩০ মেট্রিকটনে ৷ বর্তমানে রপ্তানির পরিমাণ সামান্য বেড়েছে৷ তবে, তার পরিমাণ ৭০ মেট্রিকটনের কাছাকাছি।
ব্যাবসায়ীরা জানিয়েছেন, লকডাউনের নিয়ম শিথিল হলেও বাজারের পরিস্থিতিতে তেমন কোনও পরিবর্তন আসেনি ৷ আর সেটাই ভাবাচ্ছে তাঁদের ৷ কেন লকডাউন শিথিল হওয়ার পরও সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে হাওড়ার পাইকারি মাছ বাজার ?
ব্যবসায়ীদের মতে, প্রথমত, লকডাউনের জেরে কাজ হারিয়েছেন অনেকে ৷ যার জেরে মানুষের পকেটে টান পড়েছে ৷ আর তার প্রভাব পড়েছে মানুষের পাতেও ৷ তাই মাছ বিক্রির হার কমেছে ৷
দ্বিতীয়ত, লকডাউনের জেরে সাধারণ মানুষ আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন ৷ যার ফলে মাছের খুচরো ব্যবসা কমেছে ৷ তারই প্রভাব পড়েছে পাইকারি ব্যবসায় ৷
তৃতীয়ত, লকডাউন শিথিল হলেও এখনও চালু হয়নি লোকাল ট্রেন চলাচল ৷ ফলে জেলার পাইকারি মাছ ব্যবসায়ীরা যানবাহনের অভাবে আসতে পারছেন না ৷
চতুর্থত, যে কয়েকটি গাড়ি চলছে সেগুলি অনেকটা ভাড়া চাইছে ৷ তাই এই আর্থিক সংকটের সময়ে অতিরিক্ত গাড়ি ভাড়া দিয়ে মাছ কিনতে আসতে চাইছেন না অনেকেই ৷
পঞ্চমত, লকডাউনের নিয়ম শিথিল হলেও এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ৷
কীভাবে এই সমস্যাগুলির সমাধান করে বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে হাওড়ার পাইকারি মাছ বাজার ? তবে, কি বাড়ানো হয়েছে মাছের দাম ? এপ্রসঙ্গে ব্যবসায়ীদের উত্তর, বিক্রি কম হলেও মাছের দাম বাড়ানো হয়নি ৷ বরং, দাম খানিকটা কমানো হয়েছে ৷ হাওড়ার মাছ বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, রুই বিক্রি করা হচ্ছে ১১০ টাকা কেজি দরে ৷ ১৭০ টাকা কেজি দরে বিকোচ্ছে কাতলা ৷ ছোটো চিংড়ি বিকোচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকা কেজি দরে ৷ বাগদা চিংড়ির কেজি প্রতি দাম ৫০০ টাকা ৷ আর এখন যেহেতু ইলিশের সময় তা ১ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে ৷
বাজারকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনতে সবরকমের চেষ্টা করছেন হাওড়ার পাইকারি মাছ বাজারের ব্যবসায়ীরা । তবে, পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তা জানেন না কেউই ।