অবতক খবর : এরই নাম স্বার্থের রাজনীতি। অদ্ভুত এক রাজনৈতিক পরিস্থিতি চলছে রাজ্যে তো বটেই গোটা ভারতবর্ষে। সেইসঙ্গে কাঁচরাপাড়ায়ও চলছে অদ্ভুত রাজনৈতিক খেলা। কে কোন দিকে যাচ্ছে, কে কখন দলবদল করছে,কে দল ত্যাগ করছে, কে দলে ফিরে আসছে নিজের স্বার্থে তা কিছুই বোঝা যাচ্ছেনা। কিন্তু একটা কথা পরিষ্কার যে কেউই নিজেদের দলকে ভালোবাসে না। দল দলের কাজ করে চলেছে, আর কেউ কেউ নিজের স্বার্থে দল করছে। এই কথাগুলি বলা হচ্ছে তৃণমূল এবং বিজেপি দল সম্পর্কে।
কারণ, যাদের আজ দেখা যাচ্ছে তৃণমূল দলে তারাই আবার তল্পিতল্পা গুটিয়ে বিজেপিতে যোগদান করছে। আর অন্যদিকে এর বিপরীতটাও ঘটছে। অর্থাৎ বিজেপির লোক রাতারাতি তৃণমূল হয়ে যাচ্ছে। আর সবথেকে বড় বিষয় এই দলের খেলায় দলীয় উচ্চ নেতৃত্বরাই এই বিষয়টি মেনে নিচ্ছে নিজেদের স্বার্থে। এটা কি রাজনীতি? এতে কি দেশের কোন মঙ্গল হবে? আবার এরাই নাকি দেশের মঙ্গল করবে। দেশের কল্যাণ করবে এই রাজনীতি তথা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা।
রাজনীতির অর্থ কি? যারা মানুষের কথা তুলে ধরবে, মানুষের জন্য লড়াই করবে। কিন্তু এখন রাজনীতিতে সবাই সবার স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত।
কাঁচরাপাড়া নবাঙ্কুর ক্লাব প্রথমে সিপিএমের নেতাদের অঙ্গুলিহেলনে পরিচালিত হত। পরবর্তীতে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ঘটে। এই ক্লাব সোজাসুজি তৃণমূল দলে ভিড়ে যায় এবং মূলত তৎকালীন তৃণমূলের সর্বভারতীয় নেতৃত্ব মুকুল রায় এবং তার পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের অঙ্গুলিহেলনে চলে। ২৩শে মে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর এই ক্লাবটি দিশেহারা হয়ে পড়ে বলে মনে হয়। তারা সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের গেরুয়া রং-এ রঞ্জিত করে। অর্থাৎ তারা লাল থেকে সবুজ, সবুজ থেকে গেরুয়া হয়ে যায়।
বর্তমানে কাঁচরাপাড়াতে বিজেপির খুব দৈন্য অবস্থা। এরা সেটা বুঝতে পারে। যদিও বিগত শারদোৎসবে এই নবাঙ্কুর ক্লাবের পুজো উদ্বোধন করেন ব্যারাকপুরের সংসদ অর্জুন সিং,বিজেপি বিধায়ক শুভ্রাংশু রায় এবং বিজেপির বরিষ্ঠ নেতা মুকুল রায়। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে এই তিন জবরদস্ত বিজেপি নেতার সমর্থন পেয়েও এরা নিজেদের অস্তিত্ব টিঁকিয়ে রাখতে পারছে না। ফলে আজ তারা যে তৃণমূল কংগ্রেস ভবন দখল করে বিজেপির পতাকা লাগিয়ে দিয়েছিল, সেই ক্লাবটিতে আজ তারা নিজেরাই বিজেপির পতাকা নামিয়ে তৃণমূলের পতাকা উঠিয়ে দেয়। এই নিয়ে অঞ্চলে পুরনো কর্মী এবং সদ্য বিজেপি থেকে তৃণমূল হওয়া কর্মীদের মধ্যে একটা হুলুস্থুল কাণ্ড বেঁধে যায়। বাদ প্রতিবাদ এবং ঘটনাস্থলে পুলিশ চলে আসে এবং পুলিশ আসার পর অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আসে।
তবে জনসমক্ষে এটা হাস্যকর ঘটনা হয়ে রইল।যেহেতু এই ক্লাবটি প্রধান সড়কের উপর, সে কারণে মানুষ দেখতে পেল সেখানে কি চলছে। মানুষকে অসুবিধায় ফেলে, রাস্তায় যানজট সৃষ্টি করে গন্ডগোল তো হলোই। এর পাশাপাশি মানুষ সেখানে দাঁড়িয়ে এটাও দেখল যে এদের মধ্যে রাজনীতি নয় বরং স্বার্থনীতি ঢুকেছে, আর তারই সাক্ষী রইল কাঁচরাপাড়াবাসী।