লোধা নাবালককে পিটিয়ে মেরে ফেলা হলো
তমাল সাহা
বিশ্ব হৃদয় দিবসকে স্বাগত জানাবে বলে আগাম হামলে পড়েছে হাওয়া সবং থানার তিন নম্বর ডাডবা গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়চাহারা অঞ্চলে।
হৃৎপিণ্ডে লাব ডুব শব্দ হয়। অলিন্দ নিলয়ের মধ্য দিয়ে অক্সিজেন বাহিত রক্তপ্রবাহ শরীরে ছড়িয়ে পড়ে, এমনই বিজ্ঞান বলে থাকে।
সেই মুহূর্তে রক্তস্রোতের সঙ্গে যে নির্মমতা মিশে থাকে তা জীবন বিজ্ঞানে লেখা নেই। আর হৃৎপিণ্ডের সন্ধান পাওয়া গেলেও হৃদয়ের সন্ধান পাওয়া যায়নি এখনো।
হৃদরোগ কাকে বলে কে জানে?
ডাক্তার বাবুরা ফলাও করে মাতব্বরি করে এবং কার্ডিয়াক ফেলিওর বলে মৃত্যুর সার্টিফিকেট দিয়ে দেয়।
সব মৃত্যুই শেষ পর্যন্ত কার্ডিয়াক ফেলিওর এটা বুঝতে বিজ্ঞান লাগেনা।
খিদের কোন হৃৎপিণ্ড বা হৃদয় নেই এবং তার কোনো দোষও নেই।
খিদে লাগে কেন, মানুষ খেতে চায় কেন— একথা সূক্ষ্মভাবে কেউ বলতে পারেনি।
সবাই খুব সহজেই উত্তর দিয়ে দেয়, খিদে আছে বলেই খিদে লাগে। খিদে পায় বলেই খিদে লাগে।
সবংয়ের নাবালক ছেলেটির খিদে পেয়েছিল বলে চুরি করেছিল। সে লোধা ছিল বলে বেশি খিদে পেয়েছিল কিনা আমি জানি না।
খিদে পাওয়াটা অন্যায়, না চুরি করাটা অপরাধ তাও আমি জানি না।
এটুকু জানি ছেলেটার বাবা পরিযায়ী শ্রমিক ছিল। এখন দিনমজুর খাটছিল।
আর এইটুকু জানি, ওই যে রাজনীতির মাতব্বর না কি বলে যেন সেই ক্ষমতাবান লোকেরা দলবল নিয়ে তাকে গাছে বেঁধে পিটিয়ে মেরেছে।
কোনও ঝামেলায় জড়াতে চাই না আমি, শুধু এটুকুই জানি। খবরের কাগজও তা লিখেছে।
বড় এক কবির কাছ থেকে কিছু অংশ টুকে নিয়ে আমি নির্বোধের মতো শুধু এটুকুই লিখে দিতে পারি, হৃদয়ে নিষ্ঠুর হয়ে নির্মমতা, ক্রূরতা আরো যত সব হিংস্র শব্দ আছে সেসব দিয়ে তারা বধ করে গেল নাবালক শিশুটিকে এই বিশ্ব হৃদয় দিবসকে আগাম অভিবাদন জানিয়ে।
ঘটনা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩