ভারতবর্ষের ইতিহাসে দীর্ঘতম জেলখাটা অশীতিপর কবি ও অধ্যাপক ভারভারা রাও কারারুদ্ধ ও করোনা আক্রান্তঃ তাঁর মুক্তিতে রাষ্ট্রীয় দাদনপ্রাপ্ত কবিরা নীরব, নিশ্চুপ।
শব্দবাণ
তমাল সাহা
জেলখানায় পুরে দিলেই কি
কবি স্তব্ধ হয়ে যায়?
কবি তো ডানা ভাঙা পাখি নয়
উড়তে পারবে না
সে তো বাতাসের মতো
মেঘের মতো উড়াল দেয়।
এ কবি তো সে কবি নয়
কুঠুরিতে বদ্ধ থাকলেই
আকাশকে ছোট্ট দেখবে
পৃথিবীকে ক্ষুদ্র মনে হবে তার!
সে তো এতদিন
পর্বত নদীরেখা অরণ্য পাহাড়
সমুদ্র বিস্তার
ঝুপড়ি বস্তি শ্রমিক মহল্লা কুলিলাইন
সবই দেখে নিয়েছে।
আর কি দেখেছে?
রাষ্ট্রের বীভৎস মুখ।
এ কবি তো সে কবি নয়
এ তো শব্দবাণ সক্রিয় কবি
মিছিলে ময়দানে আদালতে
সমান ভাবে সক্রিয়।
কৃষ্ণচূড়ার লালের বিস্তার দেখেছে সে
সূর্যরাগ দেখেছে
প্রভাতে মধ্যাহ্নে গোধূলি বেলায়
নক্ষত্রদের সঙ্গে কথা বলেছে চাঁদের পাহারায়।
তাকে কি একটা কুঠুরি ধরে রাখতে পারে!
তার চোখকে বিদ্ধ করতে পারে
কোনো পাহারাদার প্রহরে প্রহরে।
জেল কয়েদিরাও তার বন্ধু হয়ে যায়
কবি এখন ফুরসত পেয়েছে যেন
অবিরাম শব্দবাণ ছুঁড়ে চলে প্রতিবাদী বর্ণমালায়।
বিপজ্জনক! বিপজ্জনক!
উচ্চারণ করতে করতে বাতাস
রাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি দিয়ে যায়…