শহিদ অশোক মিত্র
তমাল সাহা
আমাদের লজ্জা নেই
যে জনপদের অতীত নেই তার ইতিহাস নেই তার ভবিষ্যৎ নেই।
কারা বামপন্থী তা আমি জানিনা। এরা অতীতকে ভুলে গেছে, তাই এদের কাছে গেঁয়ো যোগী পায় না কোনো ঠাঁই।
অনেক অনেক আগে এই জনপদে অশোক মিত্র শহীদ। ৪ এপ্রিল ১৯৬৮। বোধ করি পৃথিবীর ইতিহাসে শিক্ষক আন্দোলনে প্রথম ছাত্র শহীদ। ম্যাকাডমের রাস্তা হয়েছিল রক্তাক্ত লোহিত। নৃশংসভাবে তাকে করা হয়েছিল খুন। সেই দিন জ্বলে উঠেছিল কাঁচরাপাড়ার জনপদে আগুন।
তার নামে হয়েছিল একটা রাস্তা। তাও হয়ে গেছে ছিনতাই। পার্টি নয় ভুলে গেছে তাঁকে, হ্যাঁরে মৌসুমী ক্লাব, তুইও তাকে ভুলে গেলি ভাই!
অশোক মিত্র দুটি স্কুল যথাক্রমে কাঁচরাপাড়া হাই স্কুল ও জোনপুর হাইস্কুলে পড়াশোনা করেছিল। সেই স্কুল দুটিতে তাঁর স্মরণে শহীদ বেদি স্থাপিত হয়েছিল। কাঁচরাপাড়া হাই স্কুলের বেদিটির অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। জোনপুর হাই স্কুলে সে কি অবস্থায় আছে আমার জানা নেই। সেখানে কি তাঁর স্মরণে ফুল জল পড়ে, ধূপ পোড়ে? নয়া প্রজন্মের কাছে কি থাকে তুলে ধরা হয়? হায়, শিক্ষক কুল!
যারা নিজের ইতিহাসকে দেয় ফাঁকি, তারা আবার কমিউনিস্ট হয় নাকি?
অশোক মিত্র
অদ্ভুত আশ্চর্য সব কাঁচরাপাড়ার লোক
তাদের হৃদয় আর ভারাতুর করে না সেই হারানোর শোক।
শিক্ষক আন্দোলনে শহীদ হয়েছিল যে ছাত্রটি তার নাম ছিল অশোক।
আমি হতবাক, দেখি তার পদবী মিত্র
নেমকহারাম কাঁচরাপাড়ার শিক্ষক ও ছাত্র
হায়! ধুলি ধূসরিত সে, আমরা ভুলে গেছি তার মুখচিত্র!
শহীদ তুমি!
তোমার নামে রাস্তা ছিল তাও হয়ে গেছে ছিনতাই!
আমার সেলাম তোমার প্রতি
আমি শুধু জানি—
নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান
ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।