অবতক খবর , রাজীব মুখার্জী, হাওড়া :-    লোকাল ট্রেন চালানো নিয়ে রেলের তরফে বারবার চিঠি দিয়ে জানানো হলেও এতদিন তার কোনো উত্তর পাওয়া যাচ্ছিল না রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। ইতিমধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন স্টেশনে নিত্যযাত্রীদের স্পেশাল ট্রেনে ওঠা নিয়ে বিক্ষোভ দানা বাঁধতে থাকে। গতকাল হাওড়া স্টেশনে তারা স্পেশাল ট্রেনে উঠতে গেলে রেলের তরফে বাধা দেওয়া হয়। অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের উপরে রেলের তরফে লাঠিচার্জ করার ঘটনা ঘটে। এরপর তড়িঘড়ি লোকাল ট্রেন চালানো নিয়ে পূর্ব রেলের সঙ্গে আলোচনা চায় রাজ্য সরকার ৷

অবশেষে লোকাল ট্রেন চালানোর বিষয়ে সবুজ সংকেত দিতে চলেছে নবান্ন । বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চেয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব এইচ কে ত্রিবেদী চিঠি দিলেন পূর্ব রেলের জেনেরাল ম্যানেজারকে । সেই চিঠিতে সকালে এবং বিকেলে অফিস টাইমে সীমিত সংখ্যক লোকাল ট্রেন চালানোর নিয়ে পূর্ব রেলের সঙ্গে আলোচনা চেয়েছে নবান্ন । অর্থাৎ সব ঠিক থাকলে শীঘ্রই শুরু হতে চলেছে সীমিত সংখ্যক লোকাল ট্রেন পরিষেবা । গতকালের পর আজ ফের যাত্রী বিক্ষোভে উত্তাল হয় হাওড়া স্টেশন । রেল কর্মীদের জন্য বরাদ্দ ট্রেনে ওঠার দাবি নিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন যাত্রীরা । তারা হাওড়া স্টেশনে ঢোকার চেষ্টা করলে আরপিএফ বাধা দেয় । এতে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে । যাত্রীদের দাবি, সড়কপথে তাদের কর্মস্থলে পৌঁছতে অনেক সময় লাগছে । খরচ হচ্ছে প্রচুর । তাই তাদের ট্রেনে উঠতে দিতে হবে । বিষয়টি নজরে আসার পরেই স্বরাষ্ট্র সচিব চিঠি দেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে । সেই চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতেও আপনারা সাবারবার্ন ট্রেন সার্ভিস চালু করেছেন । কিন্তু শুধুমাত্র রেলের স্টাফদের সেখানে উঠতে দেওয়া হচ্ছে । যারা সরকারি জরুরি কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদের এই ট্রেনে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না । উঠতে দেওয়া হচ্ছে না জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া সাধারণ মানুষকেও । এটা অত্যন্ত দুঃখের । আজ আরপিএফ সাধারণ মানুষের সঙ্গে যে আচরণ করেছে সেটা কোনওভাবেই কাম্য নয় ।” এরপরই স্বরাষ্ট্র সচিব লেখেন, “ আমরা মেট্রো চালানোর জন্য রেলকে সহযোগিতা করেছি । অন্যান্য স্পেশাল ট্রেন চলার ক্ষেত্রেও রাজ্য সরকার সহযোগিতা করেছে । ভিন রাজ্য থেকে মানুষজন যাতায়াত করছেন ।”

লোকাল ট্রেন চালানো নিয়ে যাত্রীরা দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছে । বামফ্রন্ট সহ অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো লোকাল ট্রেন না চালাতে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছে । পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরালো হচ্ছে উপলব্ধি করেই রাজ্য সরকার ট্রেন চালানোর বিষয়ে আলোচনা চাইল । অন্তত রাজনৈতিক মহলের বিশ্লেষণ তেমনই । আজকের চিঠিতে স্বরাষ্ট্র সচিব লিখেছেন, “ আমরা সকালে এবং বিকেলে কিছুসংখ্যক লোকাল ট্রেন যাতে চালাতে পারি তার জন্য আলোচনা চাইছি । সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে এই ট্রেন চালানো যায় সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যেতে পারে ।”