অবতক খবর : শুধু ভোট এলেই কেন দেখা মেলে সাংসদের? রবিবার গ্রামবাসীদের এই প্রশ্নে জেরবার হতে দেখা গেল হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। লকেট এর দায় রাজ্যের শাসকদলের ওপর চাপানোর চেষ্টা করতেই পাল্টা ভিড় থেকে ধেয়ে এল প্রশ্ন— ‘তা হলে আপনারা আগে কেন খোঁজ নেননি?’
অন্য সময় কেন এলাকায় আসেন না? সিঙ্গুরের আথালিয়া গ্রামে ভোটপ্রচারে গিয়ে ভোটারদের চোখা চোখা প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে কার্যত হতাশ হতে দেখা যায় বিজেপি সাংসদকে। অভিযোগের ফিরিস্তি ধেয়ে আসে লকেটের দিকে। কেউ অভিযোগ করেন, বার্ধক্য ভাতা পাননি। কেউ জানান, আবাস পাননি। সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে হুগলির বিজেপি সাংসদ তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ চাপাতে দেখা গিয়েছ। সাংসদের উদ্দেশে এক বৃদ্ধ প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘ভোটের সময় এসে বললে তো হবে না। আগে থেকে এ সব খোঁজখবর নিতে হয়। শুধু ভোটের সময় বললে হয় না।’ জবাবে লকেট আবারও বলেন, ‘এখন তৃণমূল সরকার চলছে।’’ সাংসদকে বৃদ্ধ পাল্টা বলেন, ‘‘হাজার বার তৃণমূল সরকার চালাক। কিন্তু বিজেপি, সিপিএমের (বিরোধীদের) তো এগুলো দেখার দরকার ছিল। শুধু ভোটের সময় খোঁজ নিয়ে কী হবে!’
গ্রামবসীদের ক্ষোভ প্রসঙ্গে সাংসদ লকেট চট্টোপাধয়েয়ের প্রতিক্রিয়া, ‘এটাই স্বাভাবিক। ওঁরা ভাবছেন, সাংসদ আছে। সব হয়ে যাবে। কিন্তু তাঁরা জানেন না যে, সমস্ত কেন্দ্রীয় প্রকল্প রাজ্য সরকারের হাত দিয়ে আসে। গ্রামবাসীদের ভুল বোঝানো হচ্ছে।’ সাংসদের কথায়, ‘যদিও ওঁদের বোঝানো আমাদেরই দায়িত্ব। আমাদের দল সরকারে আসা না পর্যন্ত, যাঁরা বিজেপি সাংসদ আছি, তাঁরা কাজ করতে পারছি না।’ সাংসদ আরও বলেন, ‘গ্রামবাসীদের ক্ষোভ আসলে আমাদের ওপর নয়। ভোটের আগে এসেছি বলেও নয়। ক্ষোভটা হল, এখানে কোনও উন্নয়ন হয়নি। এখানে রাস্তায় একটা আলো লাগানোর জন্যও আমাদের অনেক লড়াই করতে হয়। গ্ৰামবাসীরা সেটা জানেন না।’
গোটা ঘটনা নিয়ে সিঙ্গুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি গোবিন্দ ধাড়া বলেন, ‘লোকসভা ভোটের আগে একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন উনি (লকেট)। কিন্তু দু-একটা আলো লাগানো ছাড়া কোনও কাজ করেননি। কেউ বলতে পারবেন না যে, তৃণমূল এখানে কাজ করেনি। এলাকারও যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে। আর আবাস না পাওয়া কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়। বার্ধক্য ভাতা কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যাপার। তারা আমাদের প্রাপ্য টাকা দেয়নি। মুখ্যমন্ত্রী নিজস্ব তহবিল থেকে সেই টাকা দেবেন বলে ঠিক করেছেন।’