করোনাকালীন প্রথম ঢেউ শেষ হয়ে গেছে এক বছর আগে। দ্বিতীয় ঢেউ গড়ে তুলতে মহাশ্মশান ভূমি।
বাংলা-উড়িষ্যা সীমান্তে দাঁতনের মাঠে পড়ে আছে এক বছর ধরে হাজারো হাজারো পরিযায়ী শ্রমিকদের সাইকেল ভাঙাচোরা জংধরা অবস্থায়।
সাইকেলের কবিতা
তমাল সাহা
সাইকেল নিয়ে কবিতা লেখা যায় ভাবিনি।
সবুজ সাথী সাইকেল সে এক কাহিনী!
খোঁজ নিয়ে দেখেছি
বেশিরভাগ সাইকেল বিক্রি হয়ে গিয়েছে দোকানে।
টেন্ডার যারা পেয়েছিল কাটমানি ও কমিশন ছিল এর পেছনে।
হাজার হাজার সাইকেল পড়ে আছে
বাংলা-ওড়িশার সীমানা ৬০ নং জাতীয় সড়কের পাশে দাঁতনে।
নিরুপায় অসহায় পরিযায়ী শ্রমিক
পরিবহন বন্ধ, ক্ষুধা-তৃষ্ণা ভুলে সাইকেল চালিয়েছিল সারাদিন সারারাত
কতদিন পরে জুটবে ঘরওয়ালির হাতের একমুঠো ভাত!
চলে গেছে রুজি, চলে গেছে দানাপানি
চোখে ভাসে শুধু পরিবারের মুখখানি।
ছোট জোরে পরিযায়ী, রাতের গভীর অন্ধকারে, হয়ে যায় যদি জানাজানি।
তাও পড়ে গেল ধরা সীমানা দাঁতনে।
এবার কোভিড পরীক্ষার তাড়া—
থাকো ক্যাম্পে চৌদ্দদিন কোয়ারেন্টিনে।
সাইকেল ফেলে ক্লান্ত দুর্বল শরীরে ফিরে আসে,
ফিরে আসে পায়ে হেঁটে অথবা গাদাগাদি কোন সরকারি পরিবহনে।
পেট আছে, দানাপানি নেই,
সাইকেলে গুঁড়িয়ে কি চিবিয়ে খাবো?
এখন না খেয়ে সশরীরে মৃত্যুর কাছে চলে যাবো।
এখনো হাজার হাজার সাইকেল পড়ে আছে দাঁতনের মাঠে।
ভাঙাচোরা দেহে তার ধরে আছে জং—
এই যান্ত্রিকশয্যা দেখে মনে হয়
ভারতবর্ষ যেন সাইকেল রূপে
নয়া গণতান্ত্রিক সঙ্!