অবতক খবর,২৫ মার্চ: পরম স্নেহে ধোনি হাত রাখলেন চব্বিশের এই তরুণ যুবকের কাঁধে। জীবনে তাঁকে কোনও দিন দেখেননি এমনকি নামও শোনেন নি। অথচ এই অজানা অখ্যাত ছেলেটা রবিবার একাই শুষে নিল সার্চ লাইটের সমস্ত আলো। জীবনে প্রথম এতবড় ম্যাচে মাঠে নেমে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে, তাও আবার পরিবর্ত খেলোয়াড়( ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার) হয়ে মাঠে নেমে তুলে নিলেন চেন্নাই সুপার কিংসের তিন তিনটে ইউকেট।
মাঠের সব রথি মহারথীকে দূরে সরিয়ে অজানা অচেনা ভিগনেশ পুথুর হয়ে উঠলেন আলোচনার কেন্দ্র বিন্দু।
ম্যাচ শেষের পর সকলের কৌতুহল তুঙ্গে, কে এই ছেলেটা? জানা গেল কেরলের আলেপ্পি থেকে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের স্কাউটরা তাঁকে তুলে এনেছে। কী করে চিনবে এই ভিগনেশেকে, কারণ ওযে রাজ্যে পর্যায়ের ক্রিকেটেও খেলার সুযোগ পায়নি এখনো।
গত বছর আলেপ্পির স্থানীয় ক্রিকেট লিগ খেলার সময় জনা কয়েক লোক এসে ওর কাঁধে হাত রেখে বলেছিল মুম্বাই যাবে? ট্রায়াল দিতে হবে, যদি পাশ করে যাও তাহলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স টিমে সুযোগ পেয়ে যাবে। প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেনি ভিগনেশ। গরীব পরিবারের এক ওটো চালকের ছেলে, তরুণ ভিগনেশ স্বপ্নেও ভাবেনি এতবড় ডাক পেয়ে যাবে। একটা ছোট লোকাল লিগে খেলে এত দূর যাওয়া যায়?
ভিগনেশ কেন, প্রথমে কেউ বিশ্বাস করেনি। এরপর আক্ষরিক অর্থেই শুরু হলো স্বপ্নের যাত্রা। তিরিশ লক্ষ টাকার বিনিময়ে চুক্তি হলো ওর সঙ্গে। চলে এলো মুম্বাই। এই ছেলে জীবনে কোনও দিন প্রথম সারির প্লেয়ারদের সঙ্গে খেলেনি। ফলে তাকে পাঠিয়ে দেয়া হলো দক্ষিণ আফ্রিকায়, এমআই কেপটাউনের হয়ে নেটে বল করার জন্য। সেখানেই ভিগনেশকে দেখে মুগ্ধ হয়ে যান আফগানিস্থানের স্টার অলরাউন্ডার রশিদ খান। তাঁর সান্নিধ্যেই শুরু হয় ভিগনেশের নতুন ক্রিকেট যাত্রা।
এখন সামনের পথ হয়ত আরও কঠিন, কারন প্রত্যাশার পারদ চড়িয়ে দিয়েছেন আকাশে। সেখান থেকে মাটির লড়াইয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। এভাবেই আইপিএল মঞ্চে লড়াই করে একাধিক অজানা তরুণ স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটে। যার উজ্জ্বল উদাহরণ হার্দিক পান্ডিয়া, সূর্য কুমার যাদবের মতো মহা তারকা। এবার সেই তালিকায় কি যুক্ত হবেন ভিগনেশ পুথুর? সময়ই হয়ত এর উত্তর দেবে।