অবতক খবর :: রায়গঞ্জ ::     গতকাল পশ্চিম সুদর্শনপুর এর দেবশর্মা পাড়ায় কালু দেব শর্মার বাড়িতে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে গোয়াল ঘরে হঠাৎ করেই আগুন লেগে ৬ টি গরু এবং দুটি ছাগল অগ্নিদগ্ধ হয়। পাড়ার ছেলেরা অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় গরু ,ছাগল গুলোকে উদ্ধার করে। একটি বাছুর সঙ্গে সঙ্গে মারা যায়। ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা সমাজসেবী নয়ন দাস মহাশয় এর কাছ থেকে খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যায়

উত্তরদিনাজপুর পিপল ফর এনিমেলস এর সদস্যরা অগ্নিদগ্ধ গরু এবং ছাগলের চিকিৎসা শুরু করে। চিকিৎসা চলে তিন ঘন্টা ধরে ।এমনিতেই লকডাউন চলছে এবং এই রাত্রিবেলা কোন পশু ডাক্তার কে পাওয়া যাচ্ছিল না এবং রাত্রিবেলা পশু হাসপাতালও বন্ধ। এই অবস্থায় করোনা সংক্রমণের ভয় কে উপেক্ষা করেই উত্তর দিনাজপুর পিপল ফর এনিম্যালস এর সম্পাদক গৌতম তান্তিয়ার নেতৃত্বে সেখানে ছুটে যায় পশুপ্রেমী সংগঠনের সদস্য রাজন শর্মা, সোমেন দাস, তনয় বিশ্বাস, মৃণাল দে, শুভম দাস ,অর্ক মজুমদার এবং সুদীপ পাল। সবাই অবশ্য মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস পড়ে ছিল।

ভেটেনারি সার্জন ডক্টর মানিক লাল সাহা এবং কৃষ্ণেন্দু মন্ডল এর পরামর্শক্রমে চিকিৎসা শুরু করে পশুপ্রেমী সংগঠনের সদস্যরা। নিজেদের পকেটের পয়সা দিয়ে ইন্দিরা কলোনির একটি ওষুধের দোকান থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ, মলম কিনে আনে। দুটি বাছুর ,তিনটি বড় গরু এবং দুটি ছাগলের চিকিৎসা করা হয়। এখন সেগুলো কিছুটা সুস্থ। তবে দুটি গরুর অবস্থা খুবই সঙ্গিন। কালু দেব শর্মার মা গোয়াল ঘরে মশা তাড়ানোর জন্য ডিম রাখার কার্টুনে ধূপ ধুনো দিয়েছিল । সেখান থেকেই আগুন লেগে যায় এবং দাও দাও করে গোয়ালঘর জ্বলতে থাকে। পাড়ার ছেলেরাই আগুন নেভায় এবং অগ্নিদগ্ধ গরু ছাগল গুলোকে উদ্ধার করে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। কালু দেব শর্মার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তার বৃদ্ধা মা অনবরত কেঁদে যাচ্ছিল তার কৃতকর্মের জন্য ,নিজের ভুলের জন্য।

পশুপ্রেমী সংগঠনের পক্ষ কালু দেব শর্মা কে বলা হয়েছে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাহায্যে অগ্নিদগ্ধ গরু ও ছাগল গুলোর চিকিৎসা করার জন্য।পশুপ্রেমী সংগঠনের সদস্যরাও চিকিৎসা চালাতে যথাযথ সাহায্য করবে। পশুপ্রেমী সংগঠনের পক্ষ থেকে আক্ষেপ করে জানানো হচ্ছে যে পশুপাখি এবং পরিবেশের কল্যাণে এই পশু প্রেমী সংগঠন যে কাজগুলো করছে সমাজের কিছু লোক সেগুলোকে নিয়ে ব্যঙ্গ করছে এবং বিরূপ মন্তব্য করছে। বেকার ছেলেরা পশুপাখি ও পরিবেশ রক্ষার্থে যারা এগিয়ে আসছে তাদের মনোবল ভেঙে দিচ্ছে। তাদেরকে এগুলো কাজের জন্য প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে হুমকির মুখেও পড়তে হচ্ছে ।এরকম চলতে থাকলে পশুপ্রেমী সংগঠনকে হয়তো তাদের এই সেবামূলক কাজ বন্ধ করে দিতে হবে।