অবতক খবর, ৩ এপ্রিলঃ বারাকপুর শিল্পাঞ্চল শ্রমিক অধ্যুষিত চটকল অঞ্চল। ভাগীরথী নদীতীরে জলপ্রবাহ— তার পার জুড়ে শ্রমিক মহল্লা একের পর এক। এই অঞ্চলে কাঁকিনাড়া থেকে দশজনকে করোনা সাসপেক্টেড শনাক্ত করা হয়েছে। দুজন গিয়েছিলেন সেই আলোড়ন সৃষ্টিকারী দিল্লির নিজামুদ্দিনের তবলিঘ-ই- জামাতের অনুষ্ঠানে। তাদের সংস্পর্শে এসেছে আরও আটজন। তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। নিউটাউন হজ হাউসে একটা কোয়ারান্টাইন খোলা হয়েছে। ২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার থেকে তাদের সেখানে রাখা হয়েছে।
দশজনের মধ্যে তিনজন মহিলা রয়েছেন। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি রয়েছে। এদিকে ভাটপাড়া পৌরসভা অন্তর্গত জগদ্দলের গোলাঘরে একটা কোয়ারেন্টিন খোলা হয়েছে ।
জানা গিয়েছে এইরকম একটি শ্রমিক অধ্যুষিত ও ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে কেন এমন একটি আইসোলেশন ক্যাম্প খোলা হলো।এই নিয়ে স্থানীয় জনমনে বিক্ষোভ রয়েছে। কারণ স্বাভাবিক,এতে সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকছে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কোয়ারেন্টাইন বাস্তবোচিত ও বিজ্ঞানসম্মত নয়।
১ লা এপ্রিল সমাবেশে যোগদানকারী এদের কাঁকিনাড়া অঞ্চল থেকে উদ্ধার করা হয়। অর্থাৎ বারাকপুর শিল্পাঞ্চলে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। সে আতঙ্ক, করোনা আতঙ্ক যা স্বাভাবিক।
কাঁকিনাড়ায় চিহ্নিত, শনাক্তকৃত এইসব মানুষেরা কোথায় গিয়েছিলেন, কাদের কাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন, এটি একটি চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এই অঞ্চলে।
উল্লেখ্য দিল্লির নিজামুদ্দিনের তবলিঘ -ই- জামাতের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৩-১৫ ই মার্চ। এতে পশ্চিমবঙ্গের একাত্তর জন যোগ দিয়েছিলেন এবং তাদের মধ্যে ৫৪ জনকে চিহ্নিত করে কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়েছে। সূত্রের খবর এদের সংস্পর্শে এসেছেন প্রায় দুশো জন।
জানা যাচ্ছে এদের মধ্যে সাতজন ইন্দোনেশিয়ার অধিবাসী এবং দুজন আসানসোলের অধিবাসী পূর্বা এক্সপ্রেসে হাওড়া হয়ে খড়্গপুরে তিনটি ধর্মীয় স্থানে কিছুদিন কাটিয়েছেন। ফলতঃ সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এদেরও কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, এই অনুষ্ঠানে ২৩ টি রাজ্য এবং বিশ্বের ৬৭ টি দেশের মানুষ যোগ দিয়েছিলেন। এই যে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে এর জন্য দায়ী কে?
প্রশ্ন উঠেছে অনুষ্ঠান স্থল থেকে দিল্লি থানার দূরত্ব মাত্র ৫০ মিটার। এই অঞ্চলে এত বড় জমায়েত হলো কি করে? দিল্লি পুলিশের দায়িত্বে থাকা আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কি করছিলেন? তার ইন্টেলিজেন্স কি করছিল? তারা এই অনুষ্ঠানে বাধা দেননি কেন? অথচ শাহিনবাগ চত্বরে অবস্থান ওঠানোর জন্য কয়েক হাজার পুলিশ নামিয়ে দিয়েছিলেন অমিত শাহ। তাই সাধারণ মানুষের কাছে এটা রহস্যজনক হয়ে উঠছে।
আরও রহস্য রয়েছে। ঘটনাটি গোচরে আসার দু সপ্তাহ পূর্বে অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক মৌলানা মহম্মদ সাদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং দেশের প্রধান সুরক্ষা উপদেষ্টা অজিত গ্রোভার এক আলোচনার আয়োজন করেছিলেন। তাদের সঙ্গে কি কেন আলোচনা হয়েছিল সেটা নিয়ে একটা ধাঁধা তৈরি হয়েছে। এটাও ভারতবাসীর কাছে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।