অবতকের একটি বিশেষ প্রতিবেদনঃ

একটি ঐতিহাসিক বিয়ে

তমাল সাহা

আজ আমার খুব আনন্দের দিন। বিয়ের নেমন্তন্ন পেলে কার না আনন্দ হয়?

আজ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম বিয়ের দিন। সেটা ছিল ৭ ডিসেম্বর ১৮৫৬ সাল।

আমাদের ২৪ পরগনার গোবরডাঙ্গার খাটুয়া গ্রামে থাকতেন শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন। অধ্যাপনা করতেন সংস্কৃত কলেজে। তিনি আইনসঙ্গত প্রথম বিধবা বিবাহটি করলেন।

পাত্রী ছিলেন বর্ধমান জেলার পলাশডাঙ্গা গ্রামের বিধবা নারী কালীমতী দেবী।

ছাদনাতলা ছিল কলকাতায় ১১ নম্বর সুকিয়া স্ট্রিটে রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিকেতন।

আর কিছু কি বলার আছে?

ব্যবস্থাপক ও ব্যয় নির্বাহক ছিলেন, কে ছিলেন?

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মশাই।

তোমাকে অযুত লক্ষ নিযুত কোটি প্রণাম জানাই।

২৬ জুলাই। এই দিন ১৮৫৬ সালে বিধবা বিবাহ প্রচলন আইনিভাবে মান্যতা পায়। সেটা লর্ড ডালহৌসির আমল। তিনি বিদ্যাসাগরের সহযোগী হয়েছিলেন এই সামাজিক কল্যাণব্রত সাধনে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ৯৮৭জন। তার বিরুদ্ধাচারণ করেছিলেন তৎকালীন ব্যক্তিত্ব রাধাকান্ত দেবের নেতৃত্বে ৩৬৭৬৩ জন। তবুও জিতে গিয়েছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।

তাহলেএইবার আমি আমার মতো লিখি….

২৬ জুলাই ১৮৫৬ জাগতিক অন্ধকার কেটে যায়।

বৃষ্টি হয়েছিল কি সেইদিন, নেমেছিল কি শ্রাবণ ধারা?

বিধবা মেয়েটি দাঁড়িয়েছিল কি খোলা জানালায়

উজ্জ্বল কোনো রশ্মি কি ঘিরে ধরেছিল তাকে

আলোর স্পর্শে কি নতুন কোনো ছবি

সে এঁকেছিল নীল চোখের তারায়?

যৌন ব্যাভিচার অসহায়তা থেকে তাকে

কে এনেছিল আলোর প্রহরে?

সে দেখে লর্ড ডালহৌসি ও বিদ্যাসাগর

কড়া নাড়ে, দাঁড়িয়ে আছে দরজায়।

মেয়েটি ঝুঁকে প্রণাম রাখে তাদের পায়ের পাতায়।

তারপর সেই শুভদিন ৭ ডিসেম্বর, ১৮৫৬ আসে–

আনন্দের ঐশ্বর্য খেলে বেড়ায়।

শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপক হাত বাড়ালে

কালীমতী দেবী বৈধব্যের শাড়ি ছুঁড়ে ফেলে দেয় দূরে

তাকে ছুঁয়ে পাশাপাশি দাঁড়ায়।

মাঙ্গলিক শঙ্খনাদ বাতাসে ভাসতে ভাসতে বহুদূরে চলে যায়!