অবতক খবর,৫ জানুয়ারি : শবযানে দেহ নিয়ে যেতে গেলে লাগবে তিন হাজার টাকা। দিনমজুরির আয় শেষ মায়ের চিকিৎসা আর গার্হস্থ্য অনুশাসনেই। অগত্যা টাকা জোগাড় করতে না পেরে মায়ের শবদেহ চাদরে পেঁচিয়ে কাঁধে তুলেই শ্মশানের উদ্দেশে হেঁটে রওনা দিলেন ছেলে। সঙ্গ দিলেন অসহায় বৃদ্ধ বাবা। শোকসন্তপ পুত্রের কাঁধে মায়ের নিথর দেহ। এই ছবি অন্য রাজ্যের নয়, খোদ বাংলার। ঘটনাটি জলপাইগুড়ি জেলার ক্রানি এলাকার। বৃহস্পতিবারের ঠান্ডায় জুবুথুবু বাংলা। তার মধ্যে ভীষণরকমভাবে মনে চিড় ধরাল জলপাইগুড়ির এই দৃশ্য। একটি দেহ চাদরে পেঁচিয়ে কাঁধে নিয়ে রাস্তার ধার দিয়ে কার্যত জোর পায়ে হাঁটার চেষ্টা করছেন বছর চল্লিশের এক ব্যক্তি। পিছনের সেই দেহকেই কাঁধ দিয়েছেন সত্তরের এক বৃদ্ধ। আশপাশের বাসিন্দারা দাঁড়িয়ে দেখছেন। কিছুটা গিয়ে হাঁপিয়ে পড়ছেন তাঁরা। দেহ রাস্তায় নামাচ্ছেন। কিছুটা জিরিয়ে ফের কাঁধে তুলে হাঁটা। খোঁজ করতে জানা যায়, ওই দেহটি জলপাইগুড়ি জেলার ক্রানি ব্লকের বাসিন্দা লক্ষীরানি দেওয়ানের। বুধবার জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি, দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য তিন হাজার টাকা চান স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স। টাকা দেওয়ার সামর্থ নেই। তাই দেহ এভাবেই নিয়ে যাচ্ছেন ছেলে ও স্বামী।

নাট্য ব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন বলেন, “এটাই বাস্তব। এটা কিন্তু আগামী দিনেও হতে পারে। নতুন বছর কিছু আসেনি। দায় আমাদের প্রত্যেকের। যবে থেকে আর্থিক বৈষম্য শুরু হয়েছে, তবে থেকে এই দৃশ্য আরও বেশি প্রকট হয়ে উঠেছে। ভয়াবহ ছবি।”