অবতক খবর,১৬ ফেব্রুয়ারি : গ্রুপ ডি কর্মীদের চাকরি বাতিল হলেও আপাতত ফেরত দিতে হচ্ছে না বেতন। বৃহস্পতিবার স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ এদিন নির্দেশ দিয়েছে, আপাতত বেতন ফেরত দিতে হবে না যাঁদের চাকরির সুপারিশ বাতিল হয়েছে। তবে চাকরির সুপারিশ বাতিলের নির্দেশ বহাল থাকছে। গ্রুপ ডি নিয়োগে ১ হাজার ৯১১ জনের চাকরির সুপারিশ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সঙ্গে বেতন বন্ধেরও নির্দেশ দেওয়া হয়। এই বেতন বন্ধের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই ডিভিশন বেঞ্চে যান চাকরিহারারা। প্রশ্ন তোলেন, পাঁচ বছর শ্রমের বদলে তাঁরা বেতন পেয়েছেন। তা হলে কেন সেই টাকা ফেরাতে হবে। এদিন সেই মামলার শুনানি চলাকালীন বেতন ফেরত নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। ৩ মার্চ ফের এই মামলার শুনানি।
গ্রুপ ডি চাকরি বাতিল মামলা এদিন আদালতে মামলাকারীদের বক্তব্যে দফায় দফায় বিদ্ধ হয় স্কুল সার্ভিস কমিশন। মামলাকারীদের দাবি, এতদিন পর হঠাৎ কমিশন যুধিষ্ঠির হয়ে গেল? শুধু মামলাকারীরাই নন, কমিশনের ভূমিকায় প্রশ্ন তোলে আদালতও। বিচারপতির মন্তব্য, ‘সব দেখেশুনে মনে হচ্ছে এখানে কমিশন যেন লেডি ম্যাকবেথ।’
এদিন মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, ‘ইলেকট্রনিক ডকুমেন্টস কারচুপি করা যায়। এত তাড়াহুড়ো করে কেন রায়? বলার সুযোগ খুনিরও থাকে। অথচ এখানে কোনও কিছু প্রমাণিত নয়, তারপরও বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। একদিনেই চাকরি বাতিল কেন?’। একইসঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, ‘পাঁচ বছর আগের পরীক্ষা/ নিয়োগ। অথচ এখন কমিশন হার্ড ডিস্কের বিশ্বাসযোগ্যতার কথা বলছে।’
ভবিষ্যতে কোনও পরীক্ষায় বসা যাবে না, এই পর্যবেক্ষণই বা কীভাবে, এদিন সে প্রশ্নও তোলা হয়। মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, কমিশন, তার চেয়ারম্যান ভুল করলেও তার বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর হয়নি। আদালত সবপক্ষেরই বক্তব্য শোনে। এরপরই তারা সিঙ্গল বেঞ্চের বাকি নির্দেশগুলিকে বহাল রাখলেও বেতন ফেরতের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়। এই বিষয়টি তারা আরও একবার পর্যবেক্ষণ করবে। তারপর মার্চ মাসে এই বিষয়ে শুনানি হবে।
আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, “কমিশন তো আজ আদালতে নিজেই বলল যুধিষ্ঠির হতে তাদের দেড় বছর সময় লেগেছে। এই মামলাগুলো তো আজকের নয়। ২০২১ সাল থেকে। আজ যথেষ্ট ধৈর্য নিয়েই সবটা শুনেছেন বিচারপতিদ্বয়। ওনারা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের চাকরি বাতিলের যে নির্দেশ সেই নির্দেশ বহাল রেখেছেন।”