অবতক খবর,১০ মার্চঃ বিধানসভায় পঞ্চায়েত দপ্তরের বাজেট নিয়ে আলোচনার সময় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারি সেচ মন্ত্রী পার্থ ভৌমিককে এক মাসের মধ্যে জেলে ঢুকিয়ে দেবার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল। তিনি এরপর অধ্যক্ষের কাছে তাাঁর নিরাপত্তার দাবী করেন। অধক্ষ্য বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেন।

পার্থ ভৌমিক বলেন,শুভেন্দুর এক হুমকিতে প্রমাণ হয়ে গেল যে, বাংলাকে বঞ্চনা করতে বিরোধী দলনেতার নেতৃত্বে বিজেপি সচেষ্ট। তারা কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে কাজে লাগাচ্ছে।

বিধানসভার উপ মুখ্য সচেতক তাপস রায় বলেন, এই ঘটনাটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক।

এস এফ আই নেতারা বিধানসভার গেটে উঠে পড়ে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশের নিশ্চয়ই ত্রুটি ছিল। নাহলে এটা কেন হবে৷

পাল্টা শুভেন্দু অধিকারি বলেন,তিনি কিছু বলেননি। বিধানসভায় যা কিছু বলেছেন সব রেকর্ড রয়েছে৷

পার্থ ভৌমিক বারবার দাবি করেন তাঁকে এক মাসের মধ্যে জেলে ঢোকানোর কথাই বলা হয়েছে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই ধরনের ঘটনা, তাও আবার বিধানসভায়, স্বভাবতই চাপানউতর শুরু হয়েছে। এদিন স্পিকারের কাছে পার্থ অভিযোগ জানানোর পর স্পিকার বলেন, ‘কে কাকে জেলে ঢোকাবে? এভাবে হয় না কি? এটা রেকর্ডে রাখছি।’

পার্থ ভৌমিক বলেন, বিরোধী দলনেতার বক্তব্য়ের পর তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এরপরই অধ্যক্ষ বলেন, চাইলে প্রিভিলেজ আনতে পারেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী।

বিধানসভা অধিবেশন চলাকালীন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দেওয়ার অভিযোগ উঠল মন্ত্রী পার্থ ভৌমিককে। অভিযোগ, ‘এক মাসের মধ্যে সিধে করে দেব’, ‘এক মাসের মধ্যে ঢুকিয়ে দেব’, পার্থকে হুঁশিয়ারি দেন শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবারের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হট্টগোল শুরু হয় বিধানসভায়। শুভেন্দুর এই বক্তব্যের পরই বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে উঠে দাঁড়িয়ে পার্থ ভৌমিক অভিযোগ জানান। অধ্যক্ষও বলেন, ‘শুভেন্দুবাবু আপনি এই ধরনের কথা বলতে পারেন না।’ শুভেন্দুর এই বক্তব্য রেকর্ডে রাখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। ঘটনার সূত্রপাত শুভেন্দু অধিকারীর একটি বক্তব্যকে সামনে রেখে। এদিন পঞ্চায়েত দফতরের বাজেট প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছিল। শুভেন্দু অধিকারীও ছিলেন বক্তার তালিকায়। তাঁর বক্তব্যের একেবারে শেষ লগ্নে এসে বিজেপির টিকিটে জিতে তৃণমূলে যাওয়া দুই বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী ও বিশ্বজিৎ দাসদের দিকে তাকিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘এনারা কোন দলে আছেন? এনারা স্পিকারের সামনে বলবেন বিজেপিতে আছেন। তাহলে ওনাদের এদিকে থাকতে বলুন।’ এরপর শুভেন্দু নিজের আসনে বসে পড়েন। সেই সময় নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক পাল্টা বলেন, ‘শিশিরবাবু কোন দলে আছেন?’

অভিযোগ, এরপরই শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের সেচ মন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের উদ্দেশে বলেন, এক মাসের মধ্যে ঢুকিয়ে দেবেন। এরপরই পার্থ ভৌমিক উঠে দাঁড়িয়ে স্পিকারকে বলেন, ‘স্যর উনি বলছেন এক মাসের মধ্যে জেলে ঢোকাবেন।’ এরপরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

তবে পার্থ ভৌমিক বারবার দাবি করেন তাঁকে এক মাসের মধ্যে জেলে ঢোকানোর কথাই বলা হয়েছে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই ধরনের ঘটনা, তাও আবার বিধানসভায়, স্বভাবতই চাপানউতর শুরু হয়েছে। এদিন স্পিকারের কাছে পার্থ ভৌমিক অভিযোগ জানানোর পর স্পিকার বলেন, ‘কে কাকে জেলে ঢোকাবে? এভাবে হয় না কি? এটা রেকর্ডে রাখছি।’

পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পার্থ ভৌমিক বলেন, “সম্মানীয় বিরোধী দলনেতা নিজের বক্তব্যের মধ্যে বিশ্বজিৎ দাস, কৃষ্ণ কল্যাণীর উদ্দেশে বলেন এরা বিজেপির বিধায়ক। এদের স্পিকারের সামনে অন্য কিছু বলার ক্ষমতা নেই। আমি তখন বলি, আপনি বলতে পারবেন শিশিরবাবু কোন দলের? উনি তখন বললেন এক মাসের মধ্যে জেলে ঢুকিয়ে দেব।” একইসঙ্গে পার্থ ভৌমিক বলেন, “সিএম যে চিঠি দিয়েছিলেন, সিবিআই ইডিকে পরিচালনা করছে বিজেপি, সেটাই প্রমাণিত বিরোধী দলনেতার কথায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আমাদের সব বিধায়ককেও যদি জেলে ঢুকিয়ে দেন, তাতেও ওই শাড়ি পরা মহিলা একাই যথেষ্ট। উনিই সামলে নিতে পারবেন। তবে আমি নিজের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত। দেশে আইন আছে। আমায় জেলে ঢোকাতে গেলে কোনও দোষ থাকতে হবে। আমায় যারা চেনেন, তারা জানেন আমি অসংসদীয় কথা বলি না। আমি শিশিরবাবুর নাম করেই বলেছি। সম্মান দিয়েছি। স্পিকারের কাছে আমি বলেছি, বাইরে হলে কোর্টে যেতাম। স্পিকারের কাছে আবেদন জানলাম। বাইরে হলে কোর্টে বলব।”

উল্লেখ্য,শুভেন্দু অধিকারী বীজপুরে এসে বলে গিয়েছিলেন যে,”এই ব্যারাকপুর মহকুমা অঞ্চলের একজন মন্ত্রী এবং দু’জন বিধায়ককে জেলে ঢোকাবো।”

আজ তিনি একজন মন্ত্রীর নাম তো বলেই দিলেন। তাহলে বাকি দুজন বিধায়কের নাম কবে জানাবেন বিরোধী দলনেতা? সেই দিকেই তাকিয়ে জনগণ।