অবতক খবর: রাজ্যে দু’দিন পরেই ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে অশান্তির খবর সামনে আসছে। মুর্শিদাবাদের ডোমকলের ঘোড়ামারা পঞ্চায়েত এলাকার নিশ্চিন্তপুরে দুই কংগ্রেস কর্মীর আক্রান্ত হওয়ার খবর সামনে এসেছে। অন্যদিকে, মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জে সিপিআই(এম) প্রার্থী সহ গোঁটা পরিবার আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সামনে সেছে। এর আগে মনোনয়ন প্রক্রিয়া ঘিরে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে ভাঙড় থেকে ক্যানিং, বাসন্তী।

রাজ্যের চারিদিক ভোট সন্ত্রাসের ছবি সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে রাজ্যাপ্ল সিভি আনন্দ বোস। ছুটে গিয়েছেন ক্যানিং, বাসন্তীতে। এবার রাজ্যপালের ভর্ৎসনার মুখে নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে জবাব দিতে হবে যে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে, তার দায় কার। পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের উচিত নিজেদের দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করা। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার আপনি আপনার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ।’
সম্প্রতি, নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে নিয়োগ করা নিয়ে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে নিশানা করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।এবার রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রসঙ্গ তুলে রাজ্যপালের প্রবল সমালোচনা করেন বিরোধী দলনেতা৷ এখানেই শেষ নয়, পশ্চিমবঙ্গে ৩৫৫ ধারা লাগু করা নিয়েও জোড়াল সওয়াল করেন তিনি৷


ধূপগুড়িতে পঞ্চায়েতের প্রচারসভা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপালের বাসন্তী যাওয়া প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, ‘‘উনি যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা ভাল। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হবে না। শুধু ছবি তোলাই হবে। বাংলার আইন-শৃঙ্খলার যা পরিস্থিতি প্রতিদিন যেভাবে খুন, বোমা বিস্ফোরণ মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে তাতে ওঁর অবিলম্বে ফ্লাইট বুক করে দিল্লিতে গিয়ে বাংলায় ৩৫৫ লাগুর ব্যাপারে কেন্দ্রকে বলা উচিত।’’

প্রসঙ্গত, গত সোমবার কোচবিহার থেকে কলকাতায় ফিরেই সোজা চলে যান দক্ষিণ ২৪ পরগণার বাসন্তী৷ সেখানে খুন হওয়া যুব তৃণমূল নেতা জিয়ারুল মোল্লার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন৷ ঘুরে দেখেন ঘটনাস্থল৷ সব শেষে সাংবাদিক বৈঠক করে হিংসা নিয়ে কড়া বার্তা দিতেও শোনা যায় রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে৷ তাঁকে বলতে শোনা যায়, “রক্তের হোলি খেলা বন্ধ হওয়া দরকার। মানুষের রক্তে রাজনৈতিক হোলি দুর্ভাগ্যজনক। এলাকায় গিয়ে আমি পরিস্থিতি দেখেছি। কে হিংসা ছড়াচ্ছে সেটা বড় কথা নয়, মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এটাই বড় বিষয়। কারা অশান্তির পিছনে তার তথ্য আমার কাছে রয়েছে। হিংসার দুঃখজনক অধ্যায় শেষ হওয়া উচিত।” এর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কড়া মন্তব্য করতে গিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও উষ্মাপ্রকাশ করেন বোস৷ তিনি বলেন, “রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের উচিত সুষ্ঠু ও অবাধ ভোট করানো।” এই দিক দিয়ে দেখলে রাজ্যপালের এদিনের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ ।