অবতক খবর: পঞ্চায়েত নির্বাচনে বেলাগাম হিংসা, সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। এবার কতকটা সেই সুরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোলা চিঠি দিলেন অপর্ণা সেন, বোলান গঙ্গোপাধ্যায় সহ বিশিষ্ট জনেরা। চিঠিতে লেখা হয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে বেলাগাম সন্ত্রাস হয়েছে, প্রশাসন তার দায় অস্বীকার করতে পারে না।
বোলান ওই চিঠি ড্রাফ্ট করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন অপর্ণা, তাতে সরাসরি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মমতাকে দায়ী করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে ৩৭ দিনে ৫২জন প্রাণ হারিয়েছেন। বহু মানুষ নিখোঁজ। এই অরাজকতার দায়িত্ব পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এবং আপনার। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের ওপর নির্ভর করে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনকে চলতে হয়। পশ্চিমবঙ্গের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এই দায়িত্ব আপনি কোনওভাবেই অস্বীকার করতে পারেন না’।
বাংলার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ‘জল্লাদের উল্লাসমঞ্চ’ উদ্ধৃতি উঠে আসে অপর্ণার মুখে। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি অপর্ণা সেন বলেন, “আমার বলার মতো কিছুই নেই। সকলের মতো আমিও নিরুপায় হয়ে দেখছি। কিছু বলেও তো লাভ হচ্ছে না! সেই সময় পরিবর্তনের ডাক দেওয়া ভুল ছিল না, দরকার ছিল। তখন বামেরা যা করছিল, অত্যন্ত অন্যায় করছিল। হার্মাদ বাহিনী গ্রামে গ্রামে ভোট দিতে দিত না। আমরা দেখেছি। সেগুলো ভুলিনি। কিন্তু এটা চাইনি।”
বাম জমানার শেষ দিকে বাংলায় যে পরিবর্তনের ডাক উঠেছিল, তাতে শামিল ছিলেন সমাজের বুদ্ধিজীবীরাও। অপর্ণাও সেই সময় পরিবর্তনের কথা বলেছিলেন। তাহলে আজ হঠাৎ এমন অবস্থান কেন প্রশ্ন করলে অপর্ণা বলেন, “আমি তো আনিনি! মানুষ ভোট দিয়ে এনেছেন। উনি ভোট পেয়েছেন।”
তাহলে কি বাংলায় ফের পরিবর্তন চাইছেন অপর্ণা, নেতিবাচক উত্তর দেন তিনি। বলেন, “কার বদলে কাকে আনবেন! পরিবর্তনের জন্য কিন্তু কেউ নেই, কেউ কোথাও নেই। একটা লোককেও দেখতে পাচ্ছি না চারপাশে। গণতন্ত্রের বিন্দুমাত্র অবশিষ্ট নেই এদেশে। কিছুদিন পর এভাবে কথা বলাও যাবে না হয়ত। বাংলা এবং বাংলার শাসকদলকে ধরেই বলছি, যেখানে যত রাজনৈতিক দল রয়েছে, সকলে দুর্নীতিগ্রস্ত। যাঁরা নন, তাঁরা আসন পান না। বলার ভাষা নেই। বলে কিছুই হয় না। এত দশক ধরে বলে কী লাভ হচ্ছে! আমার মন ভেঙে গিয়েছে।”
সন্ত্রাসের প্রশ্নে মমতাকে দায়ী করে চিঠি দিলেও, একাধিক মঞ্চে মমতার সঙ্গে অপর্ণাকে দেখা যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আগেও। সেই প্রসঙ্গে অপর্ণা বলেন, “আমি ব্যক্তিগত ভাবে মমতার সঙ্গে কখনও দেখা করিনি অনেকে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু আমি বলেছিলাম, যাব না। কারণ কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাই না আমি।আমি কি তাহলে সংশোধনবাদী, এমন প্রশ্নও উঠেছিল। কিন্তু উনি যখন মুখ্যমন্ত্রীর পদে রয়েছেন, সেই সুবাদে নন্দনে চলচ্চিত্র উৎসবে ডাকেন। কিন্তু নন্দন তো আমাদের করের টাকায় তৈরি! সেখানে যাওয়া যায়, মুখ্যমন্ত্রীর পাশে বসাও যায়। আর উঠতে যাবই বা কেন! উনি তো মুখ্যমন্ত্রী, তাঁর কাছে দাবি জানানো যায়, সুবিচার চাওয়া যায়।”