সেপ্টেম্বরের চতুর্থ শনিবার জাতীয় কন্যাদিবস। এবার ছিল দিনটি ২৪ সেপ্টেম্বর।
কন্যা দিবসঃ পিতা পুত্রীর কথোপকথন
তমাল সাহা
মেয়ে বলে,
বাবা! দিবস টিবস মানো না,আবার তো দেখি দিবস নিয়েই লেখো!
কাল কিন্তু কন্যাদিবস একথা মনে রেখো।
তোমার তো একটাই মেয়ে–আমি।
“তিনের বেশি নয়”– এই স্লোগানেও এখন মানুষের বড় ভয়।
তুমি তো একেই থেমে গেছ,
বুঝেছিলে এই মেয়ে হবে খুব ধড়িবাজ।
সেই আমাকে নিয়ে কিছু লেখো আজ।
এই মেয়েকে তো তুমিবিক্রি করে দিতে চাও!
নিজেই তো জন্ম দিয়েছো–
একথা বারবার বলে কি আনন্দ পাও!
আমি বলি,বাপ তো নিরুপায়।
এ মেয়ের এত প্রশ্ন, জিজ্ঞাসা!
আমি তো হয়রান।তাকে বেচে দেব না তো কি, গাল টিপে দেব শুধু ভালোবাসা!
তুমিও তো নেতাদের মতো করছো দ্বিচারিতা।
ছোট থেকেই আসছো বলে–
“সহজেই মেনে নেবেনা সব।
প্রশ্ন উত্থাপন করাটাই বড় কথা”।
এখন যদি প্রশ্ন তুলি পুজোয় সরকার কেন দেবে ক্লাবকে টাকা? কার টাকা?
আমাদের রাজস্ব, আমাদের রাজকোষ করে দেবে ফাঁকা!
শিল্পের গল্প তুমি বলো
উত্তর দাও কত চাকরি হল?
এসব প্রশ্ন করলেই আমার যত দোষ!
এসব নিয়ে তোমাকে করিনাস্তানাবুদ, তোমার খুবই আফসোস।
না, না, না। আমি বলি, এ সবই সঠিক প্রশ্ন।
সব প্রশ্নের উত্তর আমি কি দিতে পারি?
মন খারাপ করিস না,এর জবাব তো নিশ্চিত দরকারি।
বাবা! কৃষক বিরোধী বিল তিনশো শ্রমিক ছাঁটাই!
পর্যায়ক্রমে বেসরকারিকরণ!
কি চলছে দেশে? সবেতেই তো মানুষের মরণ।
পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা ভাবো।
দেশেই ওরা ভবঘুরে
হাজার হাজার মাইল হেঁটে চলে এসেছিল নিজের আবাসে।
কোথায় দানাপানি, কোথায় কাজ?
আবার ছুটছে নিজভূমেই স্বদেশেরই পরবাসে।
হ্যাঁ,সবই তো ঠিক বলছিস,
তুই তো দুচোখেই সব দেখছিস।
আমি তোর বাবা কি করতে পারি?
একা একা যুদ্ধে জেতা সে তো বড় কঠিন ভারি।
বাবা! তুমি তো বলো,কার্যের পেছনে আছে কারণ।
এখন তো দেখছি প্রশ্ন তোলাটাই বারণ।
আর তুমি বলো, আমাকে বেচবে!
করোনাকাল! উপার্জনহীন মানুষ কেই বা আমাকে কিনবে?
দেখছি অভিমান হয়েছে তোর বড়।
তুই না থাকলে, আমি তো ঘরবন্দী একা ভয়ে জড়োসড়ো।
আয়! কাছে আয়!
তোকে বিক্রি করে দেবো তা হয় নাকি!
তাহলে তো আমি সন্তানহারা হবো।
ওসব তো কথার কথা,বুঝেছি আমি তোর মনের ব্যথা।
আয়! চুমু দিই তোর কপালে
তুই-ই তো আমাকে সতেজ রাখিস দিনভর– সকালে বিকালে।