শুরু হয়ে গেল নভেম্বর মাস, বিপ্লবের মাস।
হেমন্তের অরণ্যে বিবর্ণ পাতা ঝরে, নতুন পাতার আগমনী সংবাদ খেলা করে…

পরের গল্পঃবাক্য-বানান শিক্ষা
তমাল সাহা

লেনিন দীর্ঘজীবী হোক–
বাক্যটি মুছতে
জেলখানার দেয়াল ভাঙতে হয়েছিল–
এ পর্যন্ত সকলেই জানে।

জেলবন্দিরা তখন সবাই মিলে সোচ্চারে
লেনিন দীর্ঘজীবী হোক– এই স্লোগান তুলে
দেয়াল ভাঙতে নির্দেশ দিয়েছিল যে ব্রিগেডিয়ার মস্তান
সেই হুকুমদারের কান ঝালাপালা করে তুললো।

দেয়াল ভেঙে ফেললেও
বাক্যটির কিছুই করা গেল না।
বরঞ্চ খণ্ড খণ্ড ইট এক একটি শব্দে আলাদা হয়ে ছড়িয়ে পড়তে লাগলো।
টুকরোগুলো পাশাপাশি জুড়ে দিতেই
তারা আবার জেগে উঠলো—
লেনিন দীর্ঘজীবী হোক!

আর জেলের দেয়াল ভাঙার সুযোগে
জেলবন্দিরা জেল থেকে বেরিয়ে পড়ল।
স্লোগান দিতে দিতে
শহরের সমস্ত দেয়ালে লিখে যেতে লাগল
লেনিন দীর্ঘজীবী হোক– স্লোগানটি।
সারা শহর ছেয়ে গেল স্লোগানে।

বাইরে এতো হইচই-সরব স্লোগান শুনে
বাড়ির সমস্ত শিশুরা বেরিয়ে পড়লো রাস্তায়।
তারা দেখে দেয়ালজুড়ে সর্বত্র
লাল কালিতে লেখা অপূর্ব এক বাক্য!

এবার তারা দেয়ালের দিকে ঝুঁকে পড়ে
বানান করে পড়তে লাগলো–
ল-য় এ-কার লে
দন্ত্যন-য় হ্রস্ব ই- নি
দন্ত্যন– লেনিন
দ-য় দীর্ঘ-ঈকার দী
ঘ-য় রেফ– দীর্ঘ
হ- য় ও-কার হো
ক — হোক।

সব শিশুরা হাতের মুঠো আকাশে তুলে
হাঁটতে লাগলো সড়কে অলিতে গলিতে
কন্ঠে দুরন্ত আওয়াজ—
লেনিন দীর্ঘজীবী হোক!