অলিন্দ যুদ্ধ, বিনয় বাদল দীনেশ, বিবাদীবাগ! ৯৩ বছর পার। তাহলে এই বলিদান কি ব্যর্থ হয়ে যাবে? রাইটার্স বিল্ডিং। লাল রংয়ের দেয়াল, লাল অক্ষরে লেখা সেই রক্তলেখা সব কি বিফলে যাবে?
সেই রাইটার্স বিল্ডিং– রক্তক্ষয়ী লড়াই, তিন অস্ত্রীকে অভিবাদন!
সে এলো না
তমাল সাহা
চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের ঘটনায় আমাদের উত্তেজনা বেড়েছিল।
মাস্টারদার উপর নির্যাতন,পরবর্তীতে ফাঁসি
তারপর বঙ্গোপসাগরের জল উথাল পাথাল—
সে অনেক ঘটনা ঘটেছিল।
প্রীতিলতা সায়ানাইড মুখে পুরে দিয়েছিল।
জানিনা, লুন্ঠনের অস্ত্রগুলো এখন কোথায় আছে।
জালালাবাদের যুদ্ধে ছোট্ট কিশোর টেগরা বল নিহত হয়েছিল।
বুড়ি বালামের যুদ্ধ-মাভেরিক জাহাজ, বিনয় বাদল দীনেশ- অলিন্দ যুদ্ধ,
রিভলভার সাপ্লায়ার বিপিন বিহারীর বৈপ্লবিক দৌরাত্ম্য,
অরবিন্দ বোমা বানিয়ে ঋষি হয়ে গেল,
নিবেদিতা হয়ে গেল বিপ্লবীদের সঙ্গী—
অনেক কিছুই ঘটেছিল।
সিধু কানু হুল বানিয়েছিল
বিরসা উলগুলান।
তিতুমির বাঁশের কেল্লা বানিয়েছিল।
হাজার হাজার সিপাহি মঙ্গল পান্ডের নেতৃত্বে বারাকপুর ছাউনিতে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল।
জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড,
রবীন্দ্রনাথ নাইটহুড ছুঁয়ে ফেলে দিয়েছিল
ভগৎ সিং পার্লামেন্টে বোমা মেরেছিল, সামনে ঝুলছিল ফাঁসির দড়ি…
যদি এসব না হতো, তবেই বা কি হতো?
সুভাষ বোস দেশ থেকে অন্তর্হিত হয়ে সামরিক ফৌজ তৈরি করে কি কান্ডটাই না করেছিল, তাতে কি হয়েছে?
আর না করলেই বা কি হতো?
যতীন দাস অনশন,
সোজা ভাষায় না খেয়ে মারা গেল।
ক্ষুদিরাম বাংলা থেকে দৌড়ে ছুটে গেল বিহারের মুজফফরপুরে বোমা হাতে! তাও মারলো ভুল একটা লোককে!
আর তারপর হাসতে হাসতে ফাঁসিতে গেয়ে গেল জীবনের জয়গান।
প্রফুল্ল চাকীর ছিন্নমুণ্ড কি লালবাজারের মাটিতে পোঁতা আছে?
যদি এই বিস্ফোরণ-টিস্ফোরণ না হতো তবেই বা কি হতো?
যে নেতা সোজা বা উল্টো করে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করলেন,
চারদিক থেকে বন্দেমাতরম! জয় হিন্দ! ধ্বনির হল্লা উঠলো—
যদি এইসব না হতো তবেই বা কি হতো?
স্বীকার করতে বাধা নেই এ সবই সত্যি ঘটনা।
এবং শেষ পর্যন্ত তা বার্ষিক অনুষ্ঠানে পরিণত হলো।
তবে এর ফলাফল শূন্য।
সে আর কি চাইছে জানি না।
সাতাত্তর বছর পার! তার প্রতীক্ষায় আছি।
আসলে যার আসার কথা ছিল,
সে এলো না।