চৌদ্দটি শি*শুমৃ*ত্যু কোনো ব্যাপার নয়
তমাল সাহা

হেমন্তে পাতা ঝরার শব্দ শেষ হয়ে এলো। শীত এসেছে আমাদের গাঁয়ে।
অসময়ে মিগজাউম ঘূর্ণিঝড় হয়েছে। আমাদের এখানে নিম্নচাপে বৃষ্টি হলো।

বৃষ্টি দেখলেই
কবিদের সুখস্মৃতি ভেসে ওঠে। শৈশবের বৃষ্টিভেজা দিনের কথা মনে পড়ে যায়।
তেমন ভাবে আকাশের বুকে চাঁদ ফুটে উঠলে কবিদের চোখে মুখে বুকে ভালোবাসা প্রগাঢ় হয়ে ওঠে।

কবিরা অতীত স্মৃতির কথা লিখে যতটা ধূসর সুখ অনুভব করে ততটা কি বর্তমান এবং অনাগত ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে পারে?

পৃথিবীতে এমন কোনো কবি নেই, কবিতায় নারী ও শি*শুর কথা লেখেনি।
তারা শিশু ও নারীদের জন্য খুব ভাবে।

কবিতায় বৌদ্ধিক ভাবনার বস্তু খুব থাকে‌
কবিরা মৃ*ত্যুর সুন্দর সুন্দর চিত্রকল্প আঁকে! বিজ্ঞানীদের চিন্তন থেকেও তাদের কল্পনার মাত্রা অনেক বড়।

মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ২৪ ঘন্টায় ছাড়পত্র পাওয়া চৌদ্দটি শি*শুর মৃ*ত্যু হয়েছে।
এভাবে গদ্যময় পংক্তি কোনো কবিতার লাইন হতে পারে না।

শি*শুদের প্রত্যেকেরই ওজন খুব কম ছিল। এর জন্য ডাক্তার বাবু বা হাসপাতালের পরিষেবা দায়ী হতে পারে না। মায়েরাই দায়ী।
ডাক্তার বাবুরা বলে ,মায়েদের অপুষ্টির কারণে শি*শুদের জন্মকালীন ওজন অনেক কম হয়েছে। তাই সংক্রমণ হয়েছে।
এছাড়া ইংরেজি বাংলা মিলিয়ে তারা অনেক কারণ দেখিয়েছে। শ্বাসকষ্ট জনিত কারণ, হৃদযন্ত্রের গোলযোগ, সেপটিসেমিয়ার, নিউরো ডিজেনারেটিভ ডিজঅর্ডার– এসব অনেক কথা।

পৃথিবীতে জন্মানোর পর সব শিশুই বাঁচবে এমন কোনো কথা নেই।
আমাদের এখানে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আছে, আয়ুষ্মান ভারত আছে, অসংখ্য সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল আছে, বাইপাসের ধারে আকাশ ছুঁই অনেক বেসরকারি হাসপাতাল আছে।

হাসপাতাল আছে মানে রোগ আছে, রোগ আছে মানেই মৃত্যু আছে।

আমরা আশা নিয়ে বেঁচে থাকি। বিষাদ বা বিলাপের কোনো কারণ নেই।
কটা শিশু মাত্র মরেছে, আরো কত শিশু আমাদের আছে!

প্রজনন ক্রিয়ার জন্য এখনো অনেক নারী আছে।
ঘরে তো বটেই ফুটপাতে বস্তিতে প্ল্যাটফর্মে….

*ঘটনা ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩