আজ কবি ফেদেরিকো লোরকা’র জন্মদিন
জলপাই গাছ
তমাল সাহা
এইভাবে প্রকৃত কবিরা কিংবদন্তি হয়ে যায়।
অমাবস্যায় কোটালের রক্তস্রোত ঢুকে পড়ে কবিদের আড্ডায়, শিল্পীদের আলোচনা সভায় কফি হাউসে, কেবিনে
যেখানে লিখিত হচ্ছে মানুষের জীবন প্রণালী…
ঢুকে প’ড়ে আততায়ীরা আগ্নেয়াস্ত্র হাতে।
সমস্ত সমাধিস্থল খুঁজেও পাওয়া যায়নি কবির দেহ তো দূরের কথা অস্থিমজ্জা কঙ্কাল!
প্রত্নতত্ত্বের মতো খুঁজে খুঁজে দেখেছে তদন্তকারীরা গণকবরভূমি।
কবি রেখে গেছে শুধু সময়ের পান্ডুলিপি।
কবি কি করছিল তখন?
দেখছিল দু’হাতের পেশি ও কব্জি।
কেউ কেউ বলে,
নিজের দেহের মাপ মতো কবর কবিকে দিয়েই কাটিয়ে নিয়েছিল আততায়ীরা—
কবির হাতে কোদাল!
কোদালটি দ্রুত মাথার উপর উঠছিল আর নামছিল
কবির নীল চোখে তখন জন্মমৃত্যুর খেলা।
কবি কোদাল কবর—
শব্দগুলি কিছুক্ষণ হাসতে থাকলো।
কবির উড়াল ছিল পাখির মতো মুক্ত
কবির উড়ান ছিল মেঘের মতো স্বাধীন
নাহলে কোন কবি নিজেই নিজের
কবর কাটুরে হতে পারে!
কবিই পৃথিবীর একমাত্র মানুষ নিজেই দেখে গিয়েছিল নিজের সমাধিক্ষেত্র।
কি ছিল তার কলমে?
সময়,সমাজ, মানুষ–
সংগ্রাম প্রেম ও দ্রোহের গান।
কবির দেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি কেন?
কবি ততক্ষণে মাটি হয়ে গিয়েছিল
তার কবর আগলে রেখেছিল পৃথিবীর যাবতীয় লতাগুল্ম ঘাস
তার কবর ভূমি পাহারা দিচ্ছিল একটা বড় জলপাই গাছ।
কবি গাছ হয়ে দাঁড়িয়েছিল
তার গায়ে তখনো কবিতার গন্ধ লেগেছিল—
এ কথা বলেছিল বহমান বাতাস।