একটি মৃতদেহ
তমাল সাহা

এখন আমার কোন মানুষ বন্ধু নেই,
নারী কিংবা পুরুষ।
এখন আমার বন্ধু
বাইরের ঘরের খোলা জানালা
অথবা মুক্ত দরজা।

আমি ঘরে থাকি কিন্তু ঘরবন্দি নই।
আমার নিকট আত্মীয় বলে কিছু নেই।
যা আছে দূরে ওই নক্ষত্রদের গভীরে।

গাছ কি মানুষের বন্ধু হতে পারে,
নদী বা সমুদ্র অথবা পর্বত? ‌

যদিও পর্বত আমার পছন্দ নয়।
ওই মাথা উঁচু স্থবির পর্বতের
ধ্যান-তন্ময়তা আমার পোষায় না।

আমি চাই প্রবাহ তরঙ্গ।
যদিও আমি জানি গাছ মরে,
নদী মরা স্রোত নিয়ে হেঁটে যায়,
সমুদ্র শুকায়, পর্বতেরও হয় ক্ষয়।

আমার ভাঙা সেতু খুবই পছন্দ হয়।
বাঁশের সাঁকো হলে তো আরো ভালো।
খুব ধীরে ধীরে হেঁটে যাওয়া যায়।

ভাঙা সেতু পেরিয়ে
আমি ওপারে যেতে চাই সম্পূর্ণ একা।
থাকবে উত্তাল হাওয়া, প্রকৃতির নৈসর্গ
আর কারোর সঙ্গে হবেনা আমার দেখা।

আমি চাই না কোন শববাহক।
আমি চাই আমার মৃতদেহ
পড়ে থাকুক মাটির উপর।
সেটা যেন দৃশ্যমান খাদ্যবস্তু হয়,
কাক চিল শকুন অথবা কুকুরের।

অগ্নি আমি পছন্দ করি,
কিন্তু পাবক শিখা
দ্বিতীয়বার আমাকে পুড়িয়ে মারুক
তা আমার আকাঙ্ক্ষিত নয়।

আমি প্রকাশ্যে মরতে চাই
রৌদ্রময় রাস্তায় পথচলতি
মানুষের ভিতর,
যদি বাংলার বর্ণমালা কাঁদে কাঁদুক,
আমি অসহায় এক অনাকাঙ্খিত লোক
সাজাতে পারিনি কোন ধ্রুপদী অক্ষর।
আমার জন্য কেন তবে অকারণ শোক!