বিশ্ব রক্তদান দিবস স্লোগান স্রেফ বুজরুকি
তমাল সাহা
তোমরা বলবে কেন অশ্লীল উচ্চারণ করো? প্রতিবাদ তো শ্লীল ভাষাতেই করতে পারো। প্রতিবাদের ভাষা, ক্রোধের ভাষা প্রতিরোধের ভাষা গল্পের ভাষা,চুমাচুমা পদ্যের ভাষা,প্রেমকাব্যের ভাষা কি একই রকমের হবে?
তুমি আমায় রক্ত দাও আমি তোমায় স্বাধীনতা দেবো? এত সহজ অথচ ক্রিয়াশীল দেশচেতনার কথা কে বলেছিল? কে যেন একটা ছোট্ট কবি কিশোর ছাপ্পা মারা কবি বলেছিল, এ বয়স জানে রক্তদানের পুণ্য, রক্ত দেওয়া-নেওয়া ঝুলিটা থাকে না শূন্য। এমন কথাই তো সে বলেছিল বোধ করি।
আজ বিশ্ব রক্তদান দিবস। কে নির্দেশ দিয়েছে? কেন নির্দেশ দিয়েছে? আজ এই মহান বাক্যের নির্দেশকরা কজন রক্তদান করেছেন? আজ কতজন রাষ্ট্রীয় শাসক ও তার আমলাতন্ত্র রক্তদান করেছেন? এখনো পর্যন্ত সংবাদসূত্র তা জানা যায়নি।
কেন রক্ত দেব? বিশ্বব্যাপী দিক থেকে দিগন্তে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের রাষ্ট্রেরা বছরজুড়ে প্রতিদিন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়ে যুদ্ধের উন্মাদনা সৃষ্টি করে আকাশে বোমারু বিমানের রণসজ্জা করবে, চোখ ধাঁধানো আলোর ঝলকানিতে ভূপৃষ্ঠে একের পর এক বম্বিং করে শিশু নারী পুরুষ নির্বিশেষে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করবে, বিশ্বজুড়ে মানুষের রক্ত নেবে,আর সেই অপরিশোধ্য রক্ত বছরে একদিন আমাদের পূরণ করতে হবে? এটি রাষ্ট্রপুঞ্জের সার্কাসীয় মজা– জোকারিপনা ছাড়া আর কি হতে পারে?
রক্তপাত বন্ধ করুন এই বিশ্ব স্লোগান নেই কেন? অত্যাচারী যুদ্ধলিপ্ত রাষ্ট্রের মৃত্যুদণ্ড নেই কেন? সাধারণ মানুষ উজ্জীবিত হয়ে রক্ত দেবে আর তোমরা আমাদের রক্ত নেবে?
রাষ্ট্র যুদ্ধ চালাবে, রাষ্ট্রীয় পুলিশ প্রশাসন মিলিটারি গুলি চালিয়ে আমাদের রক্ত নিতেই থাকবে আর আমরা রক্ত দিতেই থাকব?
এই স্লোগানের সার্থকতা কি?কে বলবে?
গাজায় আর কত শিশুর রক্ত নেবে তুমি, ইউক্রেনের যুদ্ধে আর কত মানুষের রক্ত নেবে তুমি?
তুমি নিশ্চুপ কেন রাষ্ট্রপুঞ্জ, এর জবাব দেবে না?