২৮ জুন,২০১৯- এর লেখা!
পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী কাটমানি ফেরত দিয়ে দিতে বলেছেন,চোরেদের দলে রাখা হবে না বলেছেন। এখন টুকুন প্রশ্ন নিয়ে এলো,কাকে নেতা বলে?
কাকে নেতা বলে?
তমাল সাহা।
আমি বলি,
ভারতবর্ষে এর আগে কোনো নেতা জন্মায়নি।
টুকুন বলে,
কি বলছো বাবা? নেতাজি,মাস্টারদা, বাঘাযতীন,ক্ষুদিরাম,বিনয়, বাদল,দীনেশ, প্রীতিলতা— এঁরা নেতা নন?
আরো বলব? ভগৎ সিং,বালগঙ্গাধর তিলক,লালা লাজপত রায়েরা?
আমি বলি,
এরা সংগ্ৰামী, লড়াকু। এরা নেতা হতে আসেন নি।
এরা আত্মবিসর্জন দিতে এসেছিলেন, আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা গ্ৰহণ করেছিলেন।
টুকুন বলে,
তবে কারা নেতা?
আমি বলি,
তারা নেতা যারা অ্যাসেম্বলি পার্লামেন্টে যায়,
দাগি আসামির পোশাক গায়,
লক্ষ লক্ষ টাকা তলব পায়,
আবার তোলা তোলে,কাটমানি খায়।
টুকুন বলে,
বাবা! ১৪১ জনের কাছ থেকে
একশ দিনের কাজের টাকা খেয়ে নিয়েছে এক নেতা।
বীরভূম চাতরা গ্ৰামের থাকেন সেই নেতা।
মজুর,কুলি-কামিনের মেহনতের ঘামের উপার্জন এই টাকা।
প্রতি মজুর থেকে নেতা গিলেছে ১৬১৭ টাকা।
এরা মানুষ? এরা স্ত্রী-প্রজন্মের কাছে মুখ দেখায় কী করে?
গরিবের টাকা আত্মসাৎ-এ এদের লজ্জা করে না?
সেই নেতাকে ঘেরাও করেছে গ্ৰামবাসীরা। তিনি বাধ্য হয়েছেন সেই টাকা ফেরত দিতে।
জানো এর পরিমাণ কত? দুলক্ষ আঠাশ হাজার টাকা।
বাবা,ঘাটালে কাটমানি খাওয়া নেতাদের লিস্ট টাঙানো হয়েছে।
এভাবে কত নেতা কত কোটি কোটি টাকা কাটমানি খেয়েছে বলো?
বাবা,খেয়াল করেছো বাংলা শব্দের জাদু?
আমি বলি,
এর মধ্যে আবার বাংলা শব্দের জাদু কি?
টুকুন বলে,
দেখো,টাকা কাট আর কোটি এই শব্দ তিনটির মধ্যে ক বর্ণ আর ট বর্ণের এদিক ওদিক আছে।
তাহলে দাঁড়ালো, যারা টাকা কাট করে কোটি কোটি টাকা ট্যাঁকে পোরে তারাই হল নেতা। নিজের ত্রাণ করেন যিনি তিনিই নেতা।
আমি টুকুনের দিকে তাকিয়ে থাকি।
টুকুন বলে,
যার নেই বিবেক ও হৃদয়
এদেশে সেই নেতা হয়।