অবতক খবর,১৬ মার্চ: ডায়মন্ড হারবারের গণ্ডি ছাড়িয়ে মাঠ বড় করলেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তাঁকে সেই জায়গা করে দিলেন দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

শনিবার সভার আলোচ্য ছিল ভোটার তালিকা সংশোধন। কিন্তু সেই বৈঠকেই সার্বিক ভাবে সাংগঠনিক বার্তাও দিয়েছেন তিনি। নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করে বলে দিয়েছেন, পাঁচ দিনের মধ্যে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত জেলা কমিটি গঠন হবে, মার্চের তৃতীয়-চতুর্থ সপ্তাহেই সম্পন্ন হয়ে যাবে ব্লকের কমিটি গঠন। পাশাপাশিই অভিষেক জানিয়ে দিয়েছেন, কাজের মূল্যায়নের ভিত্তিতে একাধিক সাংগঠনিক জেলা ও ব্লকগুলির সভাপতি বদল করা হবে।
লোকসভা ভোটের পরেই সংগঠন থেকে ‘সাময়িক বিরতি’ নিয়ে চোখের চিকিৎসা করাতে বিদেশে গিয়েছিলেন অভিষেক। ২১ জুলাইয়ের বার্ষিক শহিদ সমাবেশে তিনি যোগ দেবেন কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল।

কিন্তু সেই সভার আগের দিন কলকাতায় ফিরেছিলেন তিনি। যোগ দিয়েছিলেন সভায়। সেই মঞ্চ থেকেই অভিষেক ঘোষণা করেছিলেন, লোকসভা ভোটে যে যে এলাকায় দলের ফল খারাপ হয়েছে, সেখানে নেতৃত্ব বদল করা হবে। কিন্তু আট মাসেও তা কার্যকর হয়নি। অগস্ট মাসে আরজি করের ঘটনার পরে যখন রাজ্য তোলপাড়, তখন কয়েকটি এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্ট ছাড়া অভিষেক নীরবই ছিলেন।

তার পরের দু’মাস উৎসবে কেটে গিয়েছে। রাজনৈতিক কর্মসূচি তখন কমই ছিল। কিন্তু ২০২৫ সাল পড়তেই দেখা যায় অভিষেক নিজেকে আবার ডায়মন্ড হারবারে ‘সীমাবদ্ধ’ করে ফেলেছেন। গত আড়াই মাস তাঁর যাবতীয় ব্যস্ততা ছিল নিজের লোকসভা কেন্দ্র এলাকায় ‘সেবাশ্রয়’ কর্মসূচি ঘিরে।যে ভাবে শনিবার ৪,৫০০ নেতাকে নিয়ে অভিষেক ভার্চুয়াল সভা ডেকেছিলেন, তাতে যে মমতার অনুমোদন রয়েছে, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সভার পর আরও স্পষ্ট হল যে, অভিষেক রাজ্যের সংগঠনে ফিরে এলেন।

তৃণমূলের এখন মুখ্য ‘কাজ’ ভোটার তালিকা সংশোধন। সেই কাজে সংগঠনের পাশাপাশিই যে পেশাদার সংস্থার সমীক্ষাও প্রয়োজন, তা মমতা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন নেতাজি ইন্ডোরের সভায়। যে নেতারা আইপ্যাক নিয়ে প্রকাশ্যে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন, তাঁদের উদ্দেশেও ‘বার্তা’ দিয়েছিলেন দলের সর্বোচ্চ নেত্রী। শনিবার অভিষেক তথ্য এবং পরিসংখ্যান তুলে ধরে যে ‘সাফল্য এবং দুর্বলতা’র কথা বলেছেন, যে ভাবে ভিডিয়ো দেখিয়ে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজের প্রশিক্ষণের কথা বলেছেন, তাতে দলের অন্দরে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, সাংগঠনিক কাজ দেখার বিষয়ে মমতা তাঁকে অনুমোদন দিয়েছেন। ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ ভাবে, অভিষেকের ক্যামাক স্ট্রিটের দফতরে গিয়ে ভার্চুয়াল সভায় তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী।

গত লোকসভা ভোটের দু’মাস আগে ডায়মন্ড হারবারের ‘গণ্ডি’ ছেড়ে বেরিয়ে সংগঠনে ফিরেছিলেন অভিষেক। বিধানসভা ভোটের এক বছর আগেই ময়দানে নামলেন তিনি। যদিও অভিষেক নিজে মনে করেন, এক বছর নয়, হাতে সময় বড়জোর পাঁচ মাস। কারণ, বর্ষা-উৎসব-পরীক্ষা ইত্যাদিতে বাকি সময়টা চলে যাবে।