বিনয় ভরদ্বাজ ,অবতক খবর,৬ই মার্চ :: নৈহাটি যুব সভাপতি সনৎ দে ও তার স্ত্রী কাজল দের প্রতিবাদের পরেও অবশেষে বৃহস্পতিবার বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের উপস্থিতি তে অশোক চ্যাটার্জীর এর হাতে পতাকা গ্রহণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন বিতর্কিত’ কাউন্সিলর সুপ্রবীর চৌধুরী।এই যোগদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল উত্তর 24 পরগনা জেলা সাধারণ সম্পাদক সুবোধ অধিকারী। সঙ্গে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করলেন নৈহাটি 31 নম্বর দাপুটে বিজেপি নেতা শ্যামল বিশ্বাস।প্রায় 100 সমর্থকদের নিয়ে তারা তৃণমূলে যোগদান করেন।
তাদের এই যোগদান পর্বে অনুপস্থিত ছিলেন যুব সভাপতি সনৎ দে ও 31 নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুশীল দেবনাথ।এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেননি পার্থ দাসগুপ্ত। তাদের অনুপস্থিতি তৃণমূলের জোর গোষ্টিবাজির ইঙ্গিত দিচ্ছে।তবে পার্থ দাসগুপ্ত বিজেপির বিরুদ্ধে ডাকা ছিঃ ছিঃ মিছিলেও হাঁটেননি। নির্বাচনের পর দলকে ফেরাতে যার গুরু ভূমিকা ছিল সেই পার্থ দাশগুপ্ত এখন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিখোঁজ।
উল্লেখ্য সুপ্রবীর চৌধুরী গত বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আয়োজিত বিজেপির মিছিল মিছিলে অংশগ্রহণ করতে নৈহাটি স্বপ্নবিথি পার্কে গিয়েছিলেন কিন্তু তাকে অপমানিত করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। তাকে তাড়ানোর মূলে ছিলেন যুবনেতা সনৎ দের অনুগামীরা। সুপ্রবীর বাবুকে বিজেপির দালাল সুবিধাবাদী ও বিভিন্ন কটূক্তি করেন। তবে এর বিরুদ্ধে সরব ছিলেন সনৎ দে নিজেই। তিনি তার স্ত্রীর উপর হামলার জন্য এদের কাঠগড়ায় তুলেন। তিনি তাদের দলে যোগদানের চরম বিরোধিতা করেন ।তবে তার এই বিরোধিতা আর ধোপে টেকেনি।বিরোধিতার পরেও চৌধুরী তৃণমূলে যোগদান করলেন পার্থ ভৌমিক এর হাত ধরে।
তবে এই দলে যোগদান পরেও সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূলের যুব মঞ্চ এখনো প্রচার চালাচ্ছে। কেউ দালাল কেউ সুবিধাবাদী কেউ গাদ্দার কেউ অন্য কিছু বলে সম্বোধন করছেন। আবার একজন তো “করোনা ভাইরাস” বলে চিহ্নিত করেছেন সুপ্রবীর বাবুকে।
বিধায়ক পার্থও ভৌমিক যেহেতু বৃহস্পতিবার সুপ্রবীর বাবুকে দলে যোগদান করিয়েছেন তাই এখন বিধায়কের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন নতুন নতুন গ্রুপ তৈরি করে নৈহাটির তৃণমূলের যুবকর্মীরা। চলছে বিধায়কের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও তার বিরুদ্ধে কটাক্ষ।
অন্যদিকে এক কাউন্সিলর জানান এখন দলকে নিজের ইচ্ছা মত নাচাতে চাইছেন সনৎ দে। বিধায়ক তার উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিলেন। তাই এখন সনৎ বাবু বিধায়ক কেউ তোয়াক্কা করছেন না। বিধায়কের সিদ্ধান্ত কেউ খোলা চ্যালেঞ্জ জানানো হচ্ছে নৈহাটীর বুকে। বিধায়ক এক সময় এতটাই বাধ্য ছিলেন যে সনৎ বাবুকে দুটি সিআইসি পদ দিয়ে খুশি করতে হয়েছে ।
সূত্রের খবর যুব সভাপতি সনৎ দে নৈহাটী মাদার তৃণমূলের সভাপতির পদ চেয়ে ছিলেন সেই পদে রয়েছেন চেয়ারম্যান অশোক চ্যাটার্জী।তাই তাকে এই পদ দেওয়া যায়নি তাই তাকে দুটি সিআইসি পদ দিয়ে খুশি করা হয়।
ক্ষুব্দ আর এক কাউন্সিলর জানান যে চেয়ারম্যান অশোক চ্যাটার্জী নিজেই লোকসভা নির্বাচনের পর পালিয়ে গেছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন যারা দলকে সংগঠিত করে পুনরায় ক্ষমতায় আনবে, তখন তিনি চেয়ারম্যান পদ বা সভাপতি পদ যে পদ ছাড়তে হয় না কেন তিনি ছাড়তে রাজি কিন্তু দল যখন ক্ষমতায় ফিরে এলো তখন তিনি তার দেওয়া প্রতিসূতি ভুলে গেলেন।তিনি দুটো পদ আঁকড়ে ধরে রেখেছেন।
ক্ষুব্দ কাউন্সিলরের দাবি এখন পরিস্থিতি দিন দিন আরো জটিল হয়ে উঠছে এক এক জনকে দুটো চারটে করে পদ দিয়ে রাখা হয়েছে। তার জন্য সবটাই দায়ী বিধায়ক। এখন ক্ষমতার ভাগ করে দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। তিনি নিশ্চিত করবেন তিনি দলকে চাপমুক্ত রেখে রাজনীতি করবেন নাকি এক এক জনকে খুশি করে রাজনীতি করবেন। আর যদি খুশি করে রাজনীতি করেন তাহলে বিপক্ষে মানুষ তো জোট বদ্ধ হবেই।