বিনয় ভরদ্বাজ, অবতক খবর :: বর্তমানে দেশে অবস্থা খুবই শোচনীয় ।করোনাভাইরাস প্রতিদিন মানুষকে গ্রাস করছে ।এখন আলাদা আলাদা ঘরে থাকার প্রয়োজন। তখন প্রধানমন্ত্রী ও বহু নেতারা শাঁখ বাজাচ্ছেন । এটা হচ্ছে টা কি ?এটা কি কোন উৎসব হচ্ছে এটা কি মজার ব্যাপার? এই প্রশ্ন তুলেছেন আল ইন্ডিয়া লিভার ফাউন্ডেশন ও ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ লিভার & ডাইজেস্টিভ সায়েন্স এর অধ্যাপক ডাক্তার অভিজিৎ চৌধুরী।
সকলেরই জানা এই ভাইরাস মানুষের সঙ্গে মানুষের মেলামেশা ছড়ায়। মানুষকে আলাদা থাকার জন্য বারে-বারে বলা হচ্ছে। তখন এরা একসঙ্গে মিলে ঢাকঢোল, ঘন্টা, কাশর, শাঁখ বাজাতে রাস্তায় নেমে পড়ছেন। এদের সাবধান হতে হবে,নইলে সাবধান করে দিতে হবে।
ডঃ চৌধুরী জানান এই মুহূর্তে প্রয়োজন ডাক্তার, নার্স,স্বাস্থ্যকর্মী, সাফাই কর্মী ও ঔষধ সরবরাহকারীরা একসঙ্গে মিলে নিজেকে সেবায় মনোনীত করতে হবে । এখন প্রয়োজন খেলোয়াড়দের যারা ফ্রন্ট লাইনে দাঁড়িয়ে মারণ করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে, দেশে যতনা খেলোয়ার রয়েছেন তার চেয়ে অনেক বেশি সবজান্তা আম্পায়াররা মাঠে খেলোয়াড়দের নিয়ে কমেন্টস করতে শুরু করে দেন। তবে আমি বলব এই সবজান্তা আম্পায়াররা সরে দাঁড়াক। তারা এখন দূর হাটো। যারা প্রপার খেলোয়াড় তাদেরকে খেলতে দেন। অহেতুক মন্তব্য করবেন না। এখন বিজেপি, তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস এসব ভুলে যান । এখন করোনাকে হারাতে সরকারের পাশে দাঁড়ান। পরে অনেক সময় পাবেন কটাক্ষ করবেন রাজনীতি করে নেবেন, এখন নয়।
ডঃ চৌধুরী জানান রাজ্যে এখন সমস্ত হাসপাতাল নার্সিং হোম স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও আশাকর্মী বা স্বাস্থ্যকর্মীদের মিলে সমস্ত নিমুনিয়া রোগীদের খুঁজে বার করতে হবে। তাদের তালিকা তৈরি করতে হবে। তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা দরকার। প্রয়োজন হলে তাদের আইসোলেট করে রাখতে হবে।
ডঃ অভিজিৎ চৌধুরী জানান বর্তমানে গ্রামে গ্রামে চিকিৎসা পৌঁছে দিতে হবে। আর এই গ্রামীণ ডাক্তারদের একজোট করে তাদের কাজে লাগাতে হবে। যাদেরকে আমরা অনেক সময় কোয়াক ডাক্তার বলে থাকি কিন্তু এরাই দেশের 70 শতাংশ মানুষের চিকিৎসা পৌঁছে দেয়। ডক্টর চৌধুরী দাবি শহরভিত্তিক ডিগ্রিধারী ডাক্তারদের পাশাপাশি এই গ্রামীণ ডাক্তার, কোয়াক ডাক্তারদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করুক সরকার। কারণ এদের ছাড়া করোনা কে নিয়ন্ত্রণ করা কিছুতেই সম্ভব নয়।
ডঃ অভিজিৎ চৌধুরী এক সাক্ষাৎকারে জানান যে ইতালি আমেরিকা স্পেন চায়না যখন নিয়ন্ত্রণে হার মেনেছে তখন দক্ষিণ কোরিয়া মত ছোট্ট একটা দেশ পৃথিবীকে নতুন পথ দেখাচ্ছে। তাদের মত একটা ছোট দেশ ছয় হাজারের বেশি টেস্টিং সেন্টার খুলে তিন লক্ষ মানুষের পরীক্ষা ইতিমধ্যে করতে সক্ষম হয়েছে। আমরা কেন পারব না? কেন পারছিনা? ভিয়েতনাম কিন্তু করোনা কে বেশ ভালো নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে।আমারা পারছিনা কেন? আমরাও পারবো পারতে হবে।
ডঃ চৌধুরী জানান আমাদেরও সেই সাউথ কোরিয়ার রণনীতি নিয়েই এগুতে হবে। তিনি দাবি করেন আমরা এখন টেস্ট করতে পারছিনা কেন এখনো পর্যন্ত সকল নিউমোনিয়া রোগের তথ্য সংগ্রহ করতে পারিনি তার দিকে নজর দেওয়া দরকার। যুদ্ধ স্তরে কাজ করার দরকার।
ডঃ অভিজিৎ চৌধুরী দাবি এই মুহূর্তে মৃত্যু আমাদের সামনে। কতজন আক্রান্ত সেই তথ্য নেই। কোন কোন জায়গায় কতজন অসুস্থ রয়েছেন জানা নেই । তাই অজানা শত্রুকে পরাস্ত করতে শপথ দরকার। আসুন সমগ্র ডাক্তারবাবু,স্বাস্থ্যকর্মী,সমাজসেবী, সমাজকর্মী, ঔষধ ব্যবসায়ী সকলে মিলে একজোট হয়ে কাজ করি। কোরোনা কে রুখে দিয়ে সারা বিশ্বকে এক নতুন বার্তা দেই।