অবতক খবর,২৭ মার্চ: শুরু হয়ে গেছে গোয়েবলসীয় রাজনীতি। স্হূল বাংলায় মিথ্যা প্রচার। নাৎসি বাহিনী তৈরি আছে। তৈরি আছে গেরুয়া শার্ট। আরেকটি জল্লাদ বাহিনী তৈরি হচ্ছে গ্রীন শার্ট।
ভিডিও ক্রমশ ভাইরাল হচ্ছে। চীন মেড ভাইরাস। অনেকে বলছেন করোনা না বলে লাল ভাইরাস নামকরণ হলে ঠিক হতো। চীন ভাইরাস তৈরি করে চীনের মানুষজন আর বৃদ্ধদেরই খতম করল? এই ভাইরাস চীনের নেতাদের চেনে না? বেছে বেছে সাধারণ মানুষকেই মারল? চিলে কান নিয়ে গেছে। সেইরকম চীন করোনা এনেছে। চিল কান নিয়ে গেছে, কান কেউ পরখ করে দেখছে না। চীন করোনা ছড়িয়েছে কিভাবে, সেই প্রমাণ কেউ দিচ্ছে না। আসলে চীনের অর্থনৈতিক প্রগতির সঙ্গে আমাদের বঙ্গীয় ভাষায় যাকে উন্নয়ন বলা হয়,তার সঙ্গে বিশ্বজুড়ে কেউ পাল্লা দিতে পারছে না। চীন ব্যাপক দুঃসময়ের পরিস্থিতিতে পড়েছে এবং অনেকটাই সামলে দিয়েছে। ভিডিও যা প্রচার হচ্ছে তার উদ্দেশ্য কমিউনিস্ট বিরোধিতা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া।
রাশিয়া লকডাউন করেছে এবং শক্তভাবে সামাল দিচ্ছে। তার বিরুদ্ধেও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। রাশিয়া পাঁচশোরও বেশি সিংহ নাকি রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছে। যাতে মানুষ রাস্তায় না নামে। প্রচার চালানো হচ্ছে রাশিয়া এতোই হিংস্র। এই প্রচার চালিয়ে কমিউনিস্ট বিরোধিতা করতে চাওয়া হয়েছিল। বরং এই কমিউনিস্টবিরোধী অপপ্রচার শাপে বর হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের মানুষ বুঝতে পেরেছে রাশিয়া কত শক্ত হাতে, কড়াভাবে লকডাউনকে গুরুত্ব দিয়েছে। সিংহ এখানে প্রশাসনিক করা ব্যবস্থার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানে বিষয়টা হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্টো বুঝলি রাম।
গোয়েবলসীয় ফ্যাসিবাদী প্রচার শুরু হয়ে গেছে। তালি,থালি, কাঁসর বেজে উঠেছে। বাজিয়েছে গেরুয়াধারীরা। এক জনতা কার্ফুতেই যুদ্ধ জয়! অবৈজ্ঞানিক মানসিকতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
মোদিজীর জয় ঘোষিত হচ্ছে চারিদিকে। তিনি তলে তলে কাজ সারছেন। কোভিড-১৯ টেস্ট কিট তৈরির বরাদ্দ পেয়েছেন কোজারা ডায়াগনস্টিকের ডিরেক্টর কার্তিকেয় সারাভাই। মোদিজীর পেয়ারের লোক। এই কিট-এর বাজার দর ৪০০-৫০০ টাকা। তা কিনতে হবে ৪,৫০০ টাকায়। দেশ জুড়ে করোনার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। দেশের মানুষ ১৪০ কোটি। আর দিল্লির পাওয়ার করিডর রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে শুরু করে নর্থ ব্লক, সাউথ ব্লক এবং পার্লামেন্ট ভবন পর্যন্ত সংস্কারের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা। বলা হচ্ছে, ভোল বদলে যাবে রাষ্ট্রপতি ভবনের। রাষ্ট্রপতি ও সাংসদদের সংখ্যা কত? তাদের ভোল বদলে যাবে। করোনার পর ১৪০কোটি ভারতীয়র ভোল কোন দিকে যাবে?
রাজ্যে চলছে কৌশলী রাজনীতি। আর অন্যদিকে বলা হচ্ছে রাজনীতি করবেন না। রাজনীতির নামে কৌশলে চলছে ভোটের প্রচার।
ইতিমধ্যে দেবী বন্দনা করে ভিডিও ছাড়া হয়ে গেছে। তিনিই সব, একই মুখ বারংবার দেখানো হচ্ছে। দেবী বন্দনার ভাষ্যপাঠ শুরু হয়ে গেছে। করোনা এখন ভোট বাজারের পণ্য। রাজ্যে আর কোন মন্ত্রী আছে কিনা কেউ জানেনা। সবাই কি ঘুমিয়ে আছে? তারা কোথায়? তারা কি লক আপে ? নিরুদ্দেশ, জীবিত কিনা বোঝা যাচ্ছে না। আর দেবী নিজেই ডাক্তার, নার্স ,এডভাইজার।
করোনা ডান্স চলছে। তিনি কাউকেই চান্স দিতে চাইছেন না। তিনি চার চারটি হাসপাতাল সারপ্রাইজ ভিজিট করেছেন। সারপ্রাইজ ভিজিট মানে কি? সঙ্গে ৫০ জন সাংবাদিক নিয়ে ভিজিট করা? লাইম লাইটে, প্রচারের আলোয় আসা!
লকডাউন ভাঙছে কে? তিনি মাস্ক, স্যানিটাইজার সমস্ত কিছু বিতরণ করছেন। নিজে পরছেন না। উপদেশ দিচ্ছেন। গোয়েবলসীয় দালাল মিডিয়ারাও মাঠে নেমে পড়েছে, প্রচার দিচ্ছে।
তিনি বাজারও পরিদর্শন করছেন। মানছেন কি করোনা সংক্রান্ত বিধি নিষেধ?
এদিকে রাজ্যের মানুষ চাইছেন বাড়ি বাড়ি তাদের মাস্ক,স্যানিটাইজার পৌঁছে দেওয়া হোক, সেই গল্প কেউ বলছেন না। বলছেন না প্রতিদিন বাজারে পেটের জন্য মোটামুটি যে প্রয়োজন চাল, ডাল,আলু,আটা,মুড়ি তার দাম বাড়ছে কেন? বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই কেন? কোথায় জনপ্রতিনিধি? কোথায় নগর প্রতিনিধি? ওয়ার্ড কমিটি? তারা কোথায় গেলেন? কোথায় পুলিশ প্রশাসন? তারা কি বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন?
ভিডিওগুলি ভাইরাল হয়েছে। বলছে, করোনার পরেই ভোট। ভোট দিতে গেলে দিদি যা করেছেন তা আপনার মনে পড়বেই। দিতে হবে দিদিকে ভোট। না দিলে কাঁপবে নিশ্চিত ভোটারের ঠোঁট। ভাগ্যিস করোনা এসেছিল, তাই কৌশল অবলম্বন হলো প্রচারে। রাষ্ট্রনেতাদের ভাগ্য কি ফিরে গেল?
জয় মা করোনা’র জয়!
ওদের চোখে মসনদ, আমাদের চোখে মৃত্যু ভয়।