অবতক খবর :: বিহারে কাজে গিয়ে প্রায় এক মাসের ওপর আটকে রয়েছেন। লকডাউনের ফলে বাড়ি ফেরার সব রাস্তাই বন্ধ। এখনও কতদিন এভাবে আরও থাকতে হবে জানা নেই কারোর। এদিকে একা থেকে পরিবারের জন্য মনটা কেমন করে উঠেছিল। তাই দেরি না করে একাই সাইকেল সওয়ার হয়ে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে মালদায় এসে পৌঁছন। ৭৫ বছরের এই ‘যুবক’এর উৎসাহ দেখে তরুণরাও রীতিমতো অবাক।
রওনা দেওয়ার ৩ দিন পর তিনি বাড়ি এসে পৌঁছন। সঙ্গে মুড়ি, চিড়া বেঁধে নিয়েছিলেন। পরে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর মোথাবাড়ি কোয়ারেন্টিন সেন্টারে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি সূর্যকান্ত চৌধুরি। মোথবাড়ি থানার রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের আইল পাড়াতে বাড়ি তাঁর। বিহারের সুপাউন জেলার গোরিয়া গ্রামে মাছের কারবারের জন্য থাকেন তিনি । মাছের কারবার তাঁর। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে মাছের ব্যবসা করে আসছেন। কলকাতা থেকে ট্রেনে ও ট্রাক যোগে চারাপোনা নিয়ে গিয়ে বিহারের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করতেন।
বাবার ব্যবসায় সাহায্য করে থাকেন ছেলে সুব্রত চৌধুরি। তিনি বলেন, ভাবতেই পারিনি সাইকেল করে চলে আসবেন বাবা। লকডাউন ঘোষণার সময় সূ্র্যকান্ত বিহারেই ছিলেন। এর মধ্যে লকডাউন ঘোষণা হলে তিনি সেখানে আটকে পড়েন। এদিকে কবে লকডাউন উঠবে, কেউ জানে না। আবার বাড়তেও পারে। এদিকে পরিবারকে দেখার জন্য মন চঞ্চল হয়ে উঠেছিল। বাড়ি থেকে তাঁকে কোনও রকমে বুঝিয়ে রাখা হয়েছিল বলে জানান ছেলে । কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর নিজেকে সামলে রাখতে পারেন নি। নিজের সাইকেলেই বেরিয়ে পড়েন। গত ১৮ এপ্রিল সকালে তিনি সাইকেলে ওঠেন। ওই দিন বিহারের পূর্ণিয়াতে রাত কাটান। পরের দিন মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদায় রাত কাটান। গত সোমবার সন্ধের দিকে তিনি বাড়ি এসে পৌঁছন। তিনি সরাসরি বাড়ি চলে যাওয়াতে গ্রামবাসীরা আপত্তি জানান। পরে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাঁকে কর্মতীর্থ কোয়ারেন্টিন সেন্টারে রাখা হয়েছে।
বিডিও সঞ্জয় ঘিষিং বলেন,‘এই বয়সে এতটা পথ যে তিনি সাইকেলে এলেন, অবাক করার মতো ঘটনা। তাঁকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর কোয়ারেন্টিন সেন্টারে রাখা হয়েছে।’পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি টিঙ্কুর রহমান বিশ্বাস বলেন,‘ সূর্যকান্তবাবু বয়স্ক মানুষ। তাঁকে যাতে বিশেষভাবে নজরে রাখা হয়েছে যাতে তার কোন অসুবিধা না হয়। তাঁর হাতে মাস্ক ও স্যানিটাইজার তুলে দেওয়া হয়েছে।