অবতক খবর , সংবাদদাতা ,২১ শে এপ্রিল :: সিপিএমের আমলে শাখা সংগঠন হিসাবে দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে গ্রামে গ্রামে সংগঠন কে মজবুত করে, মূল দলের চালিকাশক্তি হয়ে ওঠেছিল নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। প্রত্যেক গ্রামে মাস্টারমশাই রা উপস্থিত থাকার সুবিধা নিয়ে কখনও গনসংগঠনের আড়ালে কখনও সরাসরি পার্টির মুখ হয়ে দলের কাজ ও সংগঠন বিস্তার করতো প্রাথমিক শিক্ষক রা।
তৃনমুল সরকারের আমলে বিগত আট বছরে প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন কখনও সেভাবেই দানা বাঁধতে পারেনি, তার মূল কারন হলো ছিলো দুটি। প্রথমত শক্তিশালী নেতৃত্বের অভাব ও মূল দলের সাথে সংযোগের অভাব হলেও দ্বিতীয় কারন হলো প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকাদের বেশিরভাগ ই সিপিএমের প্রত্যক্ষ ক্যাডার বা ক্যাডারের বংশজ।
দলের তরফে এই পোটেনশিয়াল সংগঠন টি গুরুত্ব হারায় পেশাগত কাজে সংগঠনের গুরুত্ব কমে যাওয়ার জন্য। ছাত্র আন্দোলনের মুখ হিসাবে দলে স্বীকৃতি পেয়ে যুব তৃনমুলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অশোক রুদ্র, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির দায়িত্ব নেওয়ার পর রামবাম জোটের আক্রমণ ও শক্তিশালী শিক্ষক আন্দোলনকে ভোঁতা করে পেশাগত ক্ষেত্রে শিক্ষক শিক্ষিকাদের জন্য প্রয়োজনীয় কাজগুলো সরকারকে বুঝিয়ে সম্ভব করেন।
পে কমিশনের সুবিধা সহ গ্রেড পে পরিবর্তন সহ প্রাথমিক ক্রীড়াতে সরকারি বরাদ্দ এবং প্রস্তাবিত নিজের জেলায় পোস্টিং সবকিছুই সংগঠনের সাফল্য হিসাবে শিক্ষক মহলে আসে। করোনা মহামারীতে বিদ্যালয় ছুটি ঘোষনার, লকডাউনের সময় এই রোগটি কি ও তার প্রতিকার কিভাবে সম্ভব এই সচেতনতা সফল ভাবে সারা রাজ্যে একহাজার দল বার করে তৃনমূলের শাখা সংগঠন হিসাবে অশোক রুদ্রের নেতৃত্বে রাজ্য নেতৃত্ব সফল ভাবে সংগঠিত করে “সব শোনে মাস্টারমশাই” কর্মসূচি তে।
প্রশংসনীয় এই করোনা সচেতনতা কার্যক্রমে সারা রাজ্য জুড়ে জোয়ার আসে তৃনমুল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতিতে। এই মহামারী সামাল দিতে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী নির্দেশ দেন রাজ্য সরকারের এমারজেন্সি ত্রাণ তহবিলে সাহায্য করার জন্য, শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জী অনুরোধ করেন শিক্ষার সাথে যুক্ত সকলকেই। পশ্চিমবঙ্গ তৃনমুল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র লকডাউনের মাঝেই তৃনমূলের এই শাখা সংগঠনের রাজ্য কমিটি,জেলা কমিটি ও চক্র কমিটিগুলোর কাছে আবেদন রাখেন মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিলে সাহায্য করার।
অশোক বাবু জানান তৃনমূলের সমস্ত শাখা সংগঠন গুলোর মধ্যে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশী প্রায় ২.৮৬ কোটি টাকা সতেরই এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ত্রিশ হাজারের বেশি শিক্ষক শিক্ষিকা সহায়তা করেছেন। যদিও মোট সদস্যদের এখনও অর্ধেকের বেশি সদস্য এই ফান্ডে সাহায্য করেননি তবুও তিনি আশা রাখেন শেষমেশ প্রায় চার কোটি টাকা তারা তুলে দিতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিলে। এছাড়াও অশোক বাবু জানান রাজ্য নেতৃত্ব থেকে জেলা ও চক্র নেতৃত্ব সরাসরি ভাবে স্থানীয় স্তরে মানুষদের সাহায্য করেছেন খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি র মাধ্যমে।
অসংগঠিত ভাবে প্রায় এক লক্ষের কাছাকাছি পরিবার উপকৃত হয়েছে এই কর্মসূচি তে। অশোকবাবু নিজে তিন হাজার পরিবারকে সাহায্য করেছেন। যদিও ওয়াকিবহাল মহলের মতে দান দেওয়া আর মাঠে নেমে সংগঠন করার মধ্যে ফারাক অপরিসীম, তবুও শাখা সংগঠন টিতে সঠিক নেতৃত্বগুনে প্রান সঞ্চার হয়েছে অশোক রুদ্র নেতৃত্ব হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর৷ এখন সরকারের তরফে শিক্ষক শিক্ষিকাদের জীবন জীবিকা সংক্রান্ত কাজগুলোতে সংগঠনকে আরও গুরুত্ব দিলে, শিক্ষক শিক্ষিকারা আরও সংগঠনমুখী হবে।
তৃনমুল কংগ্রেসের মূল নেতৃত্ব স্থানীয় স্তরে শিক্ষক সংগঠন কে সাথে নিয়ে কাজ করলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃনমূলের ভোটব্যাঙ্কে ডিভিডেন্ড দিতে পারে এই সংগঠন বলে তৃনমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্ব আশাবাদী