অবতক খবর,১৩ জুলাই: আনলাকি থার্টিন কিনা জানিনা। তবে আজ পৌর প্রশাসক অংশুমান রায় প্রেস মিট করে জানিয়ে দিলেন যে তিনি এই পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তিনি কি কারণে পদত্যাগ করলেন এ ব্যাপারে তিনি একটি উত্তরের উপর বারবার জোর দিতে থাকেন যে পারিবারিক কারণে এই সময়ে কিছু অসুবিধার জন্য তিনি পৌর প্রশাসক হিসেবে পদটি গ্রহণ করতে ইচ্ছুক ছিলেন না। এটা তিনি দলীয় সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে জানিয়ে দিয়েছিলেন এবং পরবর্তীতে লিখিতভাবেও তা জানান।
এটি দলীয় উচ্চস্তরের বিবেচনা করার বিষয় ছিল। এখন উচ্চ দলীয় নেতৃত্ব তাকে অব্যাহতি দিয়েছেন এবং তাঁর আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
তিনি বিশদভাবে বলেন, পরিবারে তিনি সময় দিতে পারছিলেন না। তাঁর মাতা বৃদ্ধ। এই সময়ে কিছু পারিবারিক সহযোগিতার প্রয়োজন, এইজন্যই তিনি অব্যাহতি চেয়েছিলেন। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি তাঁর দলের অন্যতম নেত্রী বলে মনে করেন। তিনি দল ছাড়ছেন না। দল যেভাবে যা নির্দেশ দেবেন তিনি করে যাবেন। কারণ তিনি দলের অনুগত কর্মী এবং সৈনিক। লকডাউনের প্রাক্কালেও পৌর অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য তিনি কিছু টেন্ডার করিয়েছেন এবং লকডাউনের কারণে সেই কর্মধারা শ্লথ হয়েছে।
তিনি কোন দলীয় চাপে বা নিজের দলের গোষ্ঠীর চাপে পদত্যাগ করছেন কিনা এ ব্যাপারে তিনি পরিষ্কার বলেন, এইদিকে আমার কোন চাপ নেই। আমি স্বেচ্ছায় অব্যাহতি চেয়েছিলাম,দল সেটি মঞ্জুর করেছে।
পৌরসভায় ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতির একটি বিষয় বাজারে ছড়িয়ে ছিল।সে ব্যাপারে তিনি বলেন, কারা ছড়িয়েছে, কেন ছড়িয়েছে তিনি বলতে পারবেন না। ১০০ কোটি টাকা সম্পর্কে তাদের কোন ধ্যান-ধারণা আছে কিনা এ ব্যাপারে তার সন্দেহ রয়েছে। ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি করতে হলে কি কি করতে হয়, কিভাবে করতে হয় সেই বোধ অভিযোগকারীদের আছে কিনা এ ব্যাপারে তিনি বিদ্রূপাত্মক স্বরে অভিযোগটির উত্তর দেন। তিনি বলেন, কোন টেন্ডার তা যাই হোক না কেন সেটা মমতা ব্যানার্জীর নির্দেশে ই- টেন্ডার হয়ে থাকে। আরো প্রশ্ন আছে, অনেকে মনে করেন ৫ লক্ষ টাকার নিচে কোন ই-টেন্ডার না দিলেও চলে অর্থাৎ সেখান থেকে কামাইবাজি করা যায়। এই রকম কত ৫ লক্ষ টাকার নিচে কত টেন্ডার দিলে ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয় সেই বোধটি যারা অভিযোগ করছেন তাদের থাকা উচিৎ।
তিনি বারবার দলীয় আনুগত্যের কথা স্বীকার করেন। তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর চাপের কাছে তিনি মাথা নত করেননি। এই কথাও তিনি বারবার বলেন। বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে, তিনি একটি দলীয় আলোচনা সভায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তাঁকে অপমান করা হয়। সুবোধ অধিকারী তাকে ও বাকি প্রশাসক ও প্রাক্তন কাউন্সিলরদের মিটিংএ ডেকে ছিলেন কিন্তু মিটিং শুরু হবার আগেই রাজু সাহানি, মৃত্যুঞ্জয় দাস ও তাদের সঙ্গীরা অংশুমান বাবুর ওপর চড়াও হন ও অপমানিত করেন। রীতিমতো নাস্তানাবুদ করা হয় তাাকে এবং তিনি সভা ছেড়ে চলে যান।
আরও দেখা যাচ্ছে যে, বর্তমান পরিস্থিতিতে যারা ক্ষমতায় আসছেন, পৌর প্রশাসনের ভূমিকায় আসছেন তারা ইতিমধ্যেই হালিশহর অঞ্চলে দলবদলু হিসেবে পরিচিত হয়ে গেছেন। অনেক আগে থেকে তারা অংশুমান রায় কে সরাতে সচেষ্ট ছিলেন । তারা ২৩শে মে-র পর দলবদল ও করছিলেন। তারা ইতিমধ্যেই অঞ্চলে অর্জুনপন্থী বলে স্বীকৃতীও পেয়েচ্ছিলেন ।
এই নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে যে,যারা এতদিন পৌর প্রধান অথবা পৌর প্রশাসক অংশুমান রায়ের বিরোধিতা করেছিলেন সেই গোষ্ঠী পৌর প্রশাসনের ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চলেছেন। অনেকে বলছেন সোজা কথায় এই পরিবর্তনের ফলাফল তৃণমূল দলের পক্ষে ভালো হবে কিনা তা ভবিষ্যতই বলবে।