তমাল সাহা , অবতক খবর,১৪ জুলাই :: করোনাকে বলা হচ্ছে বিশ্ব মহামারী। এটা একটা অতিমারী রোগ। প্রাকৃতিক বিপর্যয় তো বটেই। এটা অনস্বীকার্য। এ ব্যাপারে জনসাধারণের যেমন সতর্ক হবার ভূমিকা রয়েছে, প্রশাসনের দায়িত্ব রয়েছে মানুষকে সঠিক ভাবে এই বিষয়ে সচেতন করে তোলার। এই দুটি বিষয়ের মধ্যে নিশ্চিতভাবে কোন সমন্বয় ঘটছে না। ফলত, বিভিন্ন অঞ্চলে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করা নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সংঘর্ষ বা কলহ তৈরি হচ্ছে।

কোন অঞ্চলে যদি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করা হয় সেটা স্বাস্থ্যকরভাবে মানুষের মঙ্গলের জন্যই করা হচ্ছে। কারণ অঞ্চলের কোন মানুষ যদি করোনায় আক্রান্ত হন, তিনি এই করোনা আক্রান্তকে নিয়ে কি করবেন? কতদূর যাবেন? কোন হাসপাতালে যাবেন? শহরতলির হাসপাতালে যাবেন নাকি কলকাতায় যাবেন, তিনি একটা ব্যতিব্যস্ততার মধ্যে পড়ে যাবেন এবং তিনি মানসিক চাপে পড়ে যাবেন। তারমধ্যে একটা মানসিক হতাশা, বিষণ্ণতা কাজ করবে যে তিনি নিজে আক্রান্ত হলে তিনি কি করবেন,এটি নিশ্চিত।‌ পুলিশ প্রশাসন এবং পৌর প্রশাসনের উচিত এই কাজে অগ্রসর হওয়ার আগে জন সচেতনতা তৈরি করা। তারা সেই অঞ্চলের মানুষের জন্য যদি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করেন তাদের মঙ্গলের জন্য তবে তাদের উচিত ছিল সুধী নাগরিক, অঞ্চলের সংবাদকর্মী তাদের সঙ্গে নিয়ে বৈঠক করা। বৈঠক করে সেই কাজে হাত দেওয়া। এই কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরি করার প্রাক মুহূর্তে এই প্রশাসন এই সাংবাদিকদের, সুধী নাগরিকদের যদি সঙ্গে নিতেন, তারা যদি স্থানীয় মানুষকে বুঝিয়ে বলতেন তাহলে পুলিশ প্রশাসনকে আজকে এই দুর্বিপাকের মুখে পড়তে হত না।

আর এই সংবাদ করতে গিয়ে পুলিশ যে রূঢ় ব্যবহার করছে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে, তাদের যে হুমকি দিচ্ছে, কেন দিচ্ছে এও আমরা বুঝতে পারছি না। কারণ সাংবাদিকদের মূল কাজই হচ্ছে জনসচেতনতা তৈরি করা। এখানে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার হচ্ছে তারা সেটার ভালো-মন্দ তো কিছু বলতে যাচ্ছেন না।‌ তারা এখানে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার হচ্ছে সেই সংবাদটি মানুষকে জানাচ্ছেন। পুলিশ এবং প্রশাসনের যদি এতই ভয় যে,এই বিষয়ে সাংবাদিকরা বাধা দিচ্ছে তবে তারা কেন সাংবাদিকদের গুরুত্ব দিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন না? তাদের সঙ্গে আলোচনা করে যদি পুলিশ প্রশাসন এই কাজে হাত দেন তাহলে নিশ্চিত সাধারণ মানুষ মেনে নেবেন এবং তারা বুঝতে পারবেন এটা তাদের স্বার্থের জন্যই করা হচ্ছে এবং নাগরিক নিরাপত্তার জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা প্রশাসন নিচ্ছে। কিন্তু এই বার্তাটি কোনমতেই পৌঁছে দিতে পারছেন না পুলিশ প্রশাসন এবং পৌর প্রশাসন।

আমরা আরো ব্যাখ্যা করে বলছি যে অঞ্চলে হচ্ছে সেই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, বিশেষ করে সেই অঞ্চলের শাসক শ্রেণীর রাজনৈতিক কর্মীদেরও একটা ভূমিকা থাকা উচিত ছিল মানুষকে সচেতন করার। ‌ কিন্তু এই কাজে তারা হাত না দিয়ে তারা জোরজবরদস্তি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করতে চাইছেন,তার ফলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে।

আমরা অবতক-এর পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে এটা জানাচ্ছি যে,আপনারা নিজেরাই সচেতন হয়ে মাস্ক এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন, সোস্যাল ডিসট্যান্সিং অর্থাৎ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। আর পুলিশ প্রশাসনের কাছে আমাদের অনুরোধ যে, কোন অঞ্চলে তারা কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করার আগে সেই অঞ্চলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে, সেই অঞ্চলের মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটা সচেতনতার প্রচার করুন। তবে তাদের এই ঝামেলার সম্মুখীন হতে হবে না বলে আমাদের ধারণা এবং আমরা দৃঢ়ভাবে বারবার বলছি যে, এটা যেহেতু জনকল্যাণমূলক কাজ, প্রশাসনের সাথে আমরা আছি,আ আমরাও সাধারণ মানুষকে জানাচ্ছি যে,এই কোয়ারেন্টাইন সেন্টার যে হবে সেটা মানুষের স্বার্থেই হবে।