ফালতু রাজনীতির কচকচানি আর কাটমানি বিষয়ক লেখার গোলমালে কত মনীষার মুখ যে আড়ালে চলে যায়! ফলে ভুলে গিয়েছিলাম তাঁর কথা। কলমকে আশ্রয় করে একের পর তিনি তুলে ধরেছেন মানুষের জীবন। ৩১ জুলাই সেই জীবন কথাকারের জন্মদিন। সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন জীবনকে খুঁজে পেয়েছিলেন তাঁর লেখায়।
প্রেমচন্দ্রের মুখ
তমাল সাহা
মানুষ কি শুধু রাজনীতি করেই বাঁচে?
তোমাকেও আমি মেপে নিই সেই আঁচে।
রাজনীতি মানে কি শুধুই রাজনীতি?
না জীবন নিয়ে ঐতিহাসিক কথা।
যখন পাঠ করি,ভাবি,
এসব তো যাপিত জীবনের কত ছবি আঁকাবাঁকা।
কত সহজেই কলমের আঁচড়ে টেনেছ তুমি এই সতেজ রেখা।
নবাব রায়কে কে চেনে?
সোজ-এ-বতন–দেশ মাতার বিষাদ সঙ্গীতে তুমি মিলিয়েছিলে কন্ঠ।
জাতহারামি ইংরেজ ছেড়ে দেবে কি তোমাকে?
বাজেয়াপ্ত তো করবেই তোমার কিতাব,
তোমাকে করবে লন্ডভন্ড।
নবাব নামটি ত্যাগ করে
তুমি ধনপত রায় শ্রীবাস্তব নেমে পড়েছ বাস্তবের রাস্তায় প্রেমচন্দ্র নামে,সে তো আমরা জানি—
মানুষের দুয়ারে পেতেছ আসনখানি।
নিম্ন, পিছড়েবর্গ,অন্ত্যজ, দলিতকে পাশে রেখে ঘটনার নিপুণ বুননে তুমি গড়ে তুলেছো জীবনের আয়না—
সে আয়নাতে দেখেছি ভারতবর্ষের মুখ।
লেখকের হাতে রোগের প্রেসক্রিপশন তো থাকেই আর
তার হৃদয়ের তো বিশাল বিস্তার—
সর্বদাই রোগ নিরাময়ে উন্মুখ,
মানুষের সঙ্গে তার সার্বজনীন বিহার।
তুমি নিজহাতে গড়েছ—
শতরঞ্জ কি খিলাড়ি, গোদান,মন্দির মসজিদ,সদগতি,
দাফন, জুলুস, ধর্মঘট, বাসিভাত।
তোমার হাতে কলম ছিল
শোষণের বিরুদ্ধে এক অস্ত্রাঘাত।
জীবন জগৎ যতদিন বেঁচে থাকে
সময় তোমার মুখটি মনে রেখে নিজেই চলে এঁকে।